ডিভোর্স আটকানোর উপায়

 ডিভোর্স আটকানোর উপায়


বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্স আটকানোর বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার চেয়েও সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার ওপর বেশি নির্ভরশীল। তবে ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও, কিছু আইনি ও ব্যক্তিগত পদক্ষেপ আছে যা কার্যকর হতে পারে।

আপনি যদি ডিভোর্স আটকাতে চান, তবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করতে পারেন:

১. আইনি পদক্ষেপ (Legal Steps)

ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরও আইনিভাবে কিছু সুযোগ থাকে:

A. সালিসি পরিষদে সমঝোতার চেষ্টা

  • চেয়ারম্যানের ভূমিকা: মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, তালাকের নোটিশ চেয়ারম্যান/মেয়রের কাছে পৌঁছানোর পর তিনি আপস-মীমাংসার জন্য একটি সালিসি পরিষদ (Arbitration Council) গঠন করেন।

  • সক্রিয় অংশগ্রহণ: আপনাকে এই সালিসি পরিষদে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য আন্তরিক আগ্রহ ও যৌক্তিক কারণ তুলে ধরতে হবে। যদি সালিসি পরিষদ মনে করে যে সমঝোতা সম্ভব, তাহলে তারা বিচ্ছেদ না ঘটার সুপারিশ করতে পারে।

  • আপসের সময়: নোটিশ পাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে এই আপসের সুযোগ থাকে। এই সময়ের মধ্যে যদি সমঝোতা হয়, তবে তালাক কার্যকর হবে না।

B. তালাকের নোটিশ চ্যালেঞ্জ বা প্রত্যাহার

  • তালাকের নোটিশে ত্রুটি: যদি দেখা যায় যে তালাকের নোটিশ জারির ক্ষেত্রে আইনি পদ্ধতির কোনো ত্রুটি আছে (যেমন: নোটিশ চেয়ারম্যান বা স্ত্রীকে ঠিকভাবে পাঠানো হয়নি), তাহলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে।

  • স্বামীর তালাক প্রত্যাহার: স্বামী যদি তালাক দিয়ে থাকেন, তবে ৯০ দিনের মধ্যে তিনি লিখিতভাবে নোটিশ প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।

C. আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স আটকানো

  • যদি স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্সের মামলা করেন (যেমন: ভরণপোষণ বা নির্যাতন-এর কারণে), তবে স্বামী আইনিভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা বা তিনি তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিলেন। সেক্ষেত্রে আদালত মামলা খারিজ করে দিতে পারে।

  • দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার (Restitution of Conjugal Rights): স্বামী পারিবারিক আদালতে এই মর্মে মামলা করতে পারেন যে তিনি স্ত্রীকে তার অধিকার অনুযায়ী ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত, এবং স্ত্রী কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই তার সঙ্গে বসবাস করতে অস্বীকার করছেন। যদিও এই রায় কার্যকর করা কঠিন, তবে এটি সমঝোতার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

২. ব্যক্তিগত ও সম্পর্কভিত্তিক পদক্ষেপ (Relationship Steps)

আইনি পদক্ষেপগুলো কেবল সময় কিনতে পারে, কিন্তু সম্পর্ক বাঁচাতে প্রয়োজন ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা:

  • আন্তরিক আলোচনা: স্বামী-স্ত্রী দু'জনের মধ্যে খোলাখুলি ও শান্তভাবে আলোচনা করা। বিচ্ছেদের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং তা সমাধানের জন্য উভয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।

  • পেশাদার পরামর্শ: একজন কাউন্সিলর বা মনোবিদের সাহায্য নেওয়া। নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের সাহায্যে অনেক সময় সমস্যার গভীরে পৌঁছানো যায়, যা দুজনের একার পক্ষে সম্ভব হয় না।

  • পরিবর্তনের অঙ্গীকার: যিনি ডিভোর্স চাইছেন, তার অভিযোগগুলো আন্তরিকভাবে শুনে সেই ভুলগুলো শোধরানোর জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া এবং তা প্রমাণ করা। শুধুমাত্র মুখে নয়, কাজে পরিবর্তন দেখানো।

  • পরিবার ও মধ্যস্থতা: যদি উভয় পরিবার সাহায্য করতে ইচ্ছুক হয়, তবে তাদের মাধ্যমে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা যেতে পারে।

মনে রাখা জরুরি, ডিভোর্স আটকানোর প্রচেষ্টায় সম্মান এবং পারস্পরিক সম্মতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এক পক্ষ সম্পর্ক থেকে পুরোপুরি সরে আসতে চায় এবং তার সিদ্ধান্ত অটল থাকে, তবে জোর করে সম্পর্ক ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।

বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্স আটকানোর বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার চেয়েও সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার ওপর বেশি নির্ভরশীল। তবে ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও, কিছু আইনি ও ব্যক্তিগত পদক্ষেপ আছে যা কার্যকর হতে পারে।

আপনি যদি ডিভোর্স আটকাতে চান, তবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করতে পারেন:

১. আইনি পদক্ষেপ (Legal Steps)

ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরও আইনিভাবে কিছু সুযোগ থাকে:

A. সালিসি পরিষদে সমঝোতার চেষ্টা

  • চেয়ারম্যানের ভূমিকা: মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, তালাকের নোটিশ চেয়ারম্যান/মেয়রের কাছে পৌঁছানোর পর তিনি আপস-মীমাংসার জন্য একটি সালিসি পরিষদ (Arbitration Council) গঠন করেন।

  • সক্রিয় অংশগ্রহণ: আপনাকে এই সালিসি পরিষদে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য আন্তরিক আগ্রহ ও যৌক্তিক কারণ তুলে ধরতে হবে। যদি সালিসি পরিষদ মনে করে যে সমঝোতা সম্ভব, তাহলে তারা বিচ্ছেদ না ঘটার সুপারিশ করতে পারে।

  • আপসের সময়: নোটিশ পাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে এই আপসের সুযোগ থাকে। এই সময়ের মধ্যে যদি সমঝোতা হয়, তবে তালাক কার্যকর হবে না।

B. তালাকের নোটিশ চ্যালেঞ্জ বা প্রত্যাহার

  • তালাকের নোটিশে ত্রুটি: যদি দেখা যায় যে তালাকের নোটিশ জারির ক্ষেত্রে আইনি পদ্ধতির কোনো ত্রুটি আছে (যেমন: নোটিশ চেয়ারম্যান বা স্ত্রীকে ঠিকভাবে পাঠানো হয়নি), তাহলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে।

  • স্বামীর তালাক প্রত্যাহার: স্বামী যদি তালাক দিয়ে থাকেন, তবে ৯০ দিনের মধ্যে তিনি লিখিতভাবে নোটিশ প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।

C. আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স আটকানো

  • যদি স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্সের মামলা করেন (যেমন: ভরণপোষণ বা নির্যাতন-এর কারণে), তবে স্বামী আইনিভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা বা তিনি তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিলেন। সেক্ষেত্রে আদালত মামলা খারিজ করে দিতে পারে।

  • দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার (Restitution of Conjugal Rights): স্বামী পারিবারিক আদালতে এই মর্মে মামলা করতে পারেন যে তিনি স্ত্রীকে তার অধিকার অনুযায়ী ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত, এবং স্ত্রী কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই তার সঙ্গে বসবাস করতে অস্বীকার করছেন। যদিও এই রায় কার্যকর করা কঠিন, তবে এটি সমঝোতার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

২. ব্যক্তিগত ও সম্পর্কভিত্তিক পদক্ষেপ (Relationship Steps)

আইনি পদক্ষেপগুলো কেবল সময় কিনতে পারে, কিন্তু সম্পর্ক বাঁচাতে প্রয়োজন ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা:

  • আন্তরিক আলোচনা: স্বামী-স্ত্রী দু'জনের মধ্যে খোলাখুলি ও শান্তভাবে আলোচনা করা। বিচ্ছেদের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং তা সমাধানের জন্য উভয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।

  • পেশাদার পরামর্শ: একজন কাউন্সিলর বা মনোবিদের সাহায্য নেওয়া। নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের সাহায্যে অনেক সময় সমস্যার গভীরে পৌঁছানো যায়, যা দুজনের একার পক্ষে সম্ভব হয় না।

  • পরিবর্তনের অঙ্গীকার: যিনি ডিভোর্স চাইছেন, তার অভিযোগগুলো আন্তরিকভাবে শুনে সেই ভুলগুলো শোধরানোর জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া এবং তা প্রমাণ করা। শুধুমাত্র মুখে নয়, কাজে পরিবর্তন দেখানো।

  • পরিবার ও মধ্যস্থতা: যদি উভয় পরিবার সাহায্য করতে ইচ্ছুক হয়, তবে তাদের মাধ্যমে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা যেতে পারে।

মনে রাখা জরুরি, ডিভোর্স আটকানোর প্রচেষ্টায় সম্মান এবং পারস্পরিক সম্মতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এক পক্ষ সম্পর্ক থেকে পুরোপুরি সরে আসতে চায় এবং তার সিদ্ধান্ত অটল থাকে, তবে জোর করে সম্পর্ক ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন