অনলাইন ডিভোর্স ফরম বাংলা
দুঃখিত, বাংলাদেশে ডিভোর্সের জন্য অনলাইনে কোনো অফিসিয়াল "ডিভোর্স ফরম" (তালাকনামা ফরম) নেই যা পূরণ করে সরাসরি জমা দেওয়া যায়।
বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের প্রক্রিয়াটি আইনিভাবে শুরু করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা আবশ্যক:
১. লিখিত তালাকনামা: প্রথমে একটি লিখিত তালাকনামা বা ডিভোর্স নোটিশ প্রস্তুত করতে হয়। এটি সাধারণত একজন আইনজীবী তৈরি করেন, যেখানে বিচ্ছেদের কারণ, তারিখ এবং দেনমোহর পরিশোধের বিবরণ উল্লেখ থাকে।
২. ম্যানুয়াল নোটিশ জারি: এই লিখিত নোটিশটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের (A/D) মাধ্যমে নিম্নলিখিত দুটি ঠিকানায় পাঠানো বাধ্যতামূলক:
* স্বামী/স্ত্রীর ঠিকানায়।
* ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর।
কেন অনলাইন ফরম নেই?
- আইনি প্রক্রিয়া: তালাক কার্যকর হওয়ার আগে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সালিসি পরিষদের মাধ্যমে আপস-মীমাংসার চেষ্টা (৯০ দিনের মধ্যে) করা বাধ্যতামূলক। এই ধাপটি সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে হয়, যা অনলাইনে সম্ভব নয়। 
- স্বাক্ষর ও সত্যায়ন: নোটিশ ও পরবর্তী দলিলে স্বামী-স্ত্রী এবং চেয়ারম্যান/মেয়রের সরাসরি স্বাক্ষর ও সত্যায়ন প্রয়োজন হয়। 
অনলাইনে যা করা যেতে পারে:
যদিও সরাসরি ফরম নেই, আপনি অনলাইনে আইনি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা আইনজীবীদের ওয়েবসাইটে তালাকনামার একটি খসড়া নমুনা বা ফরম্যাট খুঁজে পেতে পারেন। তবে, এই খসড়াটি কেবল তথ্যের জন্য, এটিকে আইনিভাবে কার্যকর করতে অবশ্যই আইনজীবীর মাধ্যমে প্রস্তুত করে উল্লেখিত ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হবে।
পরামর্শ: ডিভোর্সের মতো সংবেদনশীল আইনি প্রক্রিয়ায় ভুল এড়াতে, অনলাইনে কোনো অ-অফিসিয়াল ফরম ব্যবহার না করে, সরাসরি একজন পারিবারিক আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা সবচেয়ে নিরাপদ এবং সঠিক উপায়।
দুঃখিত, আমি আপনাকে বাংলাদেশে ডিভোর্সের জন্য কোনো সম্পূর্ণ অনলাইন ফরম (online divorce form) সরবরাহ করতে পারছি না, কারণ:
১. বাংলাদেশে ডিভোর্সের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইন-ভিত্তিক নয়। তালাক বা ডিভোর্স কার্যকর করার জন্য লিখিত নোটিশ তৈরি করা, তা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এবং সালিসি পরিষদে (Arbitration Council) সশরীরে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক আইনি প্রক্রিয়া। এই ধাপগুলো অনলাইনে সম্পন্ন করা যায় না।
২. ডিভোর্সের জন্য কোনো একক সরকারি অনলাইন ফরম এখনো চালু হয়নি যা দিয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়।
তবে, আপনি যদি ডিভোর্স বা তালাকের নোটিশ লেখার জন্য একটি কাঠামোগত নমুনা (Sample Format) চান, যা আইনজীবীরা ব্যবহার করেন, তাহলে তা নিচে দেওয়া হলো। এই নোটিশের খসড়া তৈরি করে এটিকে প্রিন্ট করতে হবে এবং তারপর আইনি প্রক্রিয়া মেনে এটি ব্যবহার করতে হবে।
তালাকের নোটিশের নমুনা কাঠামো (Husband to Wife/Chairman)
[এটি শুধুমাত্র একটি খসড়া। ব্যবহারের আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।]
তারিখ: [দিন/মাস/বছর]
বরাবর,
চেয়ারম্যান/মেয়র/কমিশনার,
[ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের নাম ও ওয়ার্ড নম্বর]
ডাকঘর: [ডাকঘরের নাম],
উপজেলা: [উপজেলার নাম],
জেলা: [জেলার নাম]।
এবং
বরাবর,
স্ত্রী: [স্ত্রীর নাম],
পিতা/স্বামীর নাম: [পিতা/স্বামীর নাম],
ঠিকানা: [স্ত্রীর পূর্ণ ঠিকানা]।
বিষয়: মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৭ ধারা অনুযায়ী তালাকের নোটিশ প্রেরণ।
মহোদয়/মহোদয়া,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী [স্বামীর নাম], পিতা: [পিতার নাম], স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা: [স্বামীর পূর্ণ ঠিকানা], আপনার/আপনাদের কাছে আমার স্ত্রী [স্ত্রীর নাম], স্বামী: [স্বামীর নাম]-কে প্রদত্ত তালাকের নোটিশ জারি করার জন্য আবেদন করছি।
ঘটনার বিবরণ:
১. গত [বিবাহের তারিখ] তারিখে আমাদের মধ্যে ইসলামী শরীয়ত ও মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন হয়। কাবিননামার রেজিস্ট্রি নম্বর [যদি মনে থাকে]।
২. বিবাহের পর থেকে আমরা উভয়ে [বিবাহিত জীবনের সময়কাল] যাবৎ দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করি।
৩. বিবাহিত জীবনে থাকাকালীন [ডিভোর্সের কারণ উল্লেখ করুন, যেমন: বনিবনা না হওয়া, মানসিক নির্যাতন, দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা, ইত্যাদি]।
৪. উপরোক্ত কারণে এবং আমাদের মধ্যে চরম ভুল বোঝাবুঝি ও মানসিক অশান্তির জন্য আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, আমাদের পক্ষে আর একসঙ্গে দাম্পত্য জীবনযাপন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
৫. অতএব, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী স্বামী হিসেবে আমার স্ত্রী [স্ত্রীর নাম]-কে আজ [তারিখ] তারিখে [এক তালাক / তিন তালাক / অন্য কোনো ঘোষণা] প্রদান করলাম।
অতএব, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে, মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৭ ধারা অনুযায়ী আপস-মীমাংসার জন্য সালিশি পরিষদ গঠনসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যেন আপনার সাদর নির্দেশ হয়।
ধন্যবাদান্তে,
নোটিশ প্রদানকারীর স্বাক্ষর:
[স্বামীর স্বাক্ষর]
নাম: [স্বামীর নাম]
মোবাইল নম্বর: [মোবাইল নম্বর]
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর: [এনআইডি নম্বর]
এই নোটিশ ব্যবহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:
১. নোটিশের একটি কপি চেয়ারম্যান/মেয়র বরাবর এবং একটি কপি স্ত্রী বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে (A/D সহ) প্রেরণ করতে হবে।
২. নোটিশ জারির তারিখ থেকে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে।
৩. নোটিশ লেখার আগে অবশ্যই একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন