ওয়াইফাই এর আবিষ্কারক কে

 ওয়াইফাই এর আবিষ্কারক কে


ওয়াইফাইয়ের আবিষ্কার কোনো একক ব্যক্তির কাজ নয়, এটি বহু বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। তবে, এই প্রযুক্তির উন্নয়নে বেশ কয়েকজনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়।

  • ভিক হেয়েস (Vic Hayes): তাকে "ওয়াইফাইয়ের জনক" বলা হয়। ১৯৯৭ সালে তিনি IEEE 802.11 স্ট্যান্ডার্ড তৈরির জন্য গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই স্ট্যান্ডার্ডটিই ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (WLAN) এর ভিত্তি তৈরি করে, যা পরবর্তীতে ওয়াইফাই নামে পরিচিত হয়।

  • জন ও'সুলিভান (John O'Sullivan): তিনি একজন অস্ট্রেলিয়ান প্রকৌশলী। তার দল অস্ট্রেলিয়ার Commonwealth Scientific and Industrial Research Organisation (CSIRO)-তে কাজ করার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। এই প্রযুক্তিটি রেডিও সংকেতের হস্তক্ষেপ (interference) কমিয়ে ওয়্যারলেস ডেটা ট্রান্সফারকে আরও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। তাদের এই আবিষ্কারটি আধুনিক ওয়াইফাই প্রযুক্তির একটি মূল উপাদান।

  • হেডি লামার (Hedy Lamarr): তিনি একজন বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী ছিলেন, কিন্তু তার এক অসাধারণ আবিষ্কারের জন্য তিনি বিজ্ঞান জগতেও পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি কম্পোজার জর্জ অ্যান্থেইলের (George Antheil) সাথে মিলে "ফ্রিকোয়েন্সি-হপিং স্প্রেড স্পেকট্রাম" (frequency-hopping spread spectrum) প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। এটি শত্রুপক্ষের রেডিও সিগনাল জ্যামিং বা বাধা দেওয়া থেকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হতো। ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথের মতো আধুনিক ওয়্যারলেস প্রযুক্তিগুলো এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।

সুতরাং, ওয়াইফাইয়ের মতো একটি জটিল প্রযুক্তিকে একজন ব্যক্তির আবিষ্কার হিসেবে চিহ্নিত করা কঠিন। এর পেছনে ভিক হেয়েসের মতো প্রকৌশলীর প্রমিতকরণ, জন ও'সুলিভানের মতো বিজ্ঞানীর মূল উদ্ভাবন এবং হেডি লামারের মতো দূরদর্শী চিন্তাবিদের প্রাথমিক ধারণার অবদান রয়েছে।

ওয়াইফাইয়ের আবিষ্কারক হিসেবে এককভাবে কোনো একজন ব্যক্তির নাম বলা কঠিন। এর কারণ হলো, ওয়াইফাই প্রযুক্তি অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন আবিষ্কার এবং গবেষণার সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। তবে এর সাথে জড়িত কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা যায়:

১. হেলি লেমার (Hedy Lamarr) এবং জর্জ অ্যান্থেইল (George Antheil): ১৯৪০-এর দশকে এই দুই বিজ্ঞানী "ফ্রিকোয়েন্সি-হপিং স্প্রেড স্পেকট্রাম" (frequency-hopping spread spectrum) নামক একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। এটি এমন একটি কৌশল যা রেডিও সংকেতকে দ্রুত বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তন করতে পারে, যার ফলে সংকেত জ্যাম করা কঠিন হয়ে যায়। যদিও তারা এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নৌবাহিনীর টর্পেডো নিয়ন্ত্রণে ব্যবহারের জন্য তৈরি করেছিলেন, এই প্রযুক্তিটি আধুনিক ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথের মতো ওয়্যারলেস যোগাযোগ ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

২. ভিক্টর হেইস (Victor Hayes): তাঁকে প্রায়শই "ওয়াইফাইয়ের জনক" বলা হয়। তিনি IEEE (Institute of Electrical and Electronics Engineers) 802.11 স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ার হিসেবে কাজ করেছেন, যা ১৯৯৭ সালে ওয়াইফাইয়ের প্রথম স্ট্যান্ডার্ড প্রতিষ্ঠা করে। এই স্ট্যান্ডার্ডই ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (WLAN) এর ভিত্তি তৈরি করে, যা পরবর্তীতে ওয়াইফাই নামে পরিচিতি লাভ করে।

৩. জন ও'সুলিভান (John O'Sullivan) এবং তার দল: অস্ট্রেলিয়ার CSIRO (Commonwealth Scientific and Industrial Research Organisation) এর এই বিজ্ঞানীদল ১৯৯২ সালে এমন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যা ইনডোর পরিবেশে রেডিও সংকেতের প্রতিধ্বনি (echo) হ্রাস করতে সাহায্য করে। এই প্রযুক্তি ওয়াইফাই সিগন্যালের মান ও গতি উন্নত করে এবং এটি আধুনিক ওয়াইফাই প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই আবিষ্কারের জন্য সিএসআইআরও-কে পরবর্তীতে ওয়াইফাই সংক্রান্ত পেটেন্টের জন্য অনেক বড় প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলায় জয়ী হতে দেখা যায়।

সুতরাং, ওয়াইফাইকে এককভাবে কেউ আবিষ্কার করেননি, বরং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি আজকের রূপে এসেছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন