গর্ভবতী অবস্থায় ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম
গর্ভবতী (Pregnant) অবস্থায় ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম বাংলাদেশে অন্যান্য ডিভোর্সের মতোই। তবে, এই সময়ে তালাক কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুযায়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান মানা বাধ্যতামূলক।
এই সময়ে ডিভোর্স দেওয়ার প্রক্রিয়া এবং প্রধান পার্থক্যগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. ডিভোর্স দেওয়ার সাধারণ প্রক্রিয়া
গর্ভবতী অবস্থায় স্বামী বা স্ত্রী যেই ডিভোর্স দিক না কেন (যদি স্ত্রীর তালাক দেওয়ার ক্ষমতা থাকে), প্রথম ধাপগুলো একই থাকবে:
তালাক ঘোষণা: যিনি তালাক দিচ্ছেন, তিনি লিখিত বা মৌখিকভাবে তালাক ঘোষণা করবেন।
নোটিশ জারি: তালাক ঘোষণার পর, তাঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেজিস্টার্ড ডাকযোগে একটি লিখিত তালাকের নোটিশ নিম্নলিখিত তিনটি পক্ষকে পাঠাতে হবে:
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।
তালাক গ্রহীতা (অপর পক্ষ)।
সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্টার (কাজী)।
সালিশি পরিষদ গঠন: নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (চেয়ারম্যান/মেয়র) স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আপস বা সমঝোতার জন্য একটি সালিশি পরিষদ গঠন করবেন।
২. গর্ভবতী অবস্থায় প্রধান পার্থক্য (তালাক কার্যকরের সময়)
অন্যান্য ক্ষেত্রে নোটিশ জারির ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হয়, কিন্তু গর্ভবতী স্ত্রীর ক্ষেত্রে নিয়মটি ভিন্ন:
তালাক কার্যকর হওয়ার সময়: গর্ভবতী স্ত্রীর ক্ষেত্রে তালাক তখনই কার্যকর হবে, যখন সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে (অর্থাৎ, গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর)।
আইনগত ভিত্তি: মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ধারা ৭(৫) অনুযায়ী, স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।
অর্থাৎ, নোটিশ জারি হলেও সন্তান জন্ম না হওয়া পর্যন্ত আইনগতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর বলে গণ্য হবে না।
৩. গর্ভকালীন সময়ে স্ত্রীর অধিকার
গর্ভকালীন সময়ে ডিভোর্সের প্রক্রিয়া চললেও, স্ত্রীর নিম্নলিখিত অধিকারগুলো বলবৎ থাকবে:
ভরণপোষণ: সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত (ইদ্দতকাল পর্যন্ত) স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী সম্পূর্ণ ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।
দেনমোহর: ডিভোর্স কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে স্ত্রীকে তার পুরো দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে স্বামী আইনত বাধ্য।
সন্তানের অভিভাবকত্ব: সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ডিভোর্স কার্যকর হলেও, সন্তানের অভিভাবকত্ব ও ভরণপোষণের জন্য আলাদা আইনি নিয়ম প্রযোজ্য হবে (যেমনটা আগের উত্তরে বলা হয়েছে)।
পরামর্শ: যেহেতু গর্ভবতী অবস্থায় ডিভোর্স একটি সংবেদনশীল বিষয়, তাই সন্তানের আইনি অধিকার ও স্ত্রীর ভরণপোষণ নিশ্চিত করার জন্য একজন অভিজ্ঞ পারিবারিক আইনজীবী-এর মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা বুদ্ধিমানের কাজ।
গর্ভবতী (Pregnant) অবস্থায় ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম বাংলাদেশে অন্যান্য ডিভোর্সের মতোই। তবে, এই সময়ে তালাক কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুযায়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান মানা হয়, যা মূলত শিশুর জন্ম নিশ্চিত করা পর্যন্ত ডিভোর্সটিকে বিলম্বিত করে।
গর্ভবতী অবস্থায় ডিভোর্সের প্রক্রিয়া এবং আইনগত দিকগুলো নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
১. ডিভোর্স প্রক্রিয়া (নোটিশ প্রদান)
গর্ভবতী অবস্থায়ও তালাক প্রক্রিয়া শুরু করার ধাপগুলো একই:
তালাক ঘোষণা: স্বামী বা স্ত্রী (যদি স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়া থাকে) তালাক ঘোষণার পর লিখিত নোটিশ তৈরি করবেন।
নোটিশ জারি: তালাক ঘোষণার পর পরই নিম্নলিখিত দুটি ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশ পাঠাতে হবে:
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/সিটি কর্পোরেশনের মেয়র (স্ত্রীর স্থায়ী ঠিকানার)।
তালাক গ্রহীতা (স্বামী/স্ত্রী)।
২. আইনগত কার্যকারিতা (গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন)
সাধারণত নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হয়। কিন্তু গর্ভবতী স্ত্রীর ক্ষেত্রে নিয়মটি ভিন্ন:
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (ধারা ৭, উপধারা ৫) অনুযায়ী: স্ত্রী যদি তালাক ঘোষণার সময় গর্ভবতী থাকেন, তবে গর্ভকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত (অর্থাৎ, সন্তান জন্ম না হওয়া পর্যন্ত) তালাক কার্যকর হবে না।
ইদ্দতকাল: এক্ষেত্রে গর্ভকাল শেষ হওয়া পর্যন্তই ইদ্দতকাল হিসেবে গণ্য হবে। সন্তান প্রসবের পরই তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হবে।
অর্থাৎ, ডিভোর্সের নোটিশটি বৈধভাবে জারি হলেও, এর কার্যকারিতা শিশুর জন্ম হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
৩. গর্ভকালীন ভরণপোষণ
আইন অনুযায়ী, গর্ভকালীন সময়ে স্ত্রীর প্রাপ্য ভরণপোষণ দিতে স্বামী বাধ্য।
ইদ্দতকালের ভরণপোষণ: সন্তান জন্ম না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীকে তার স্বাভাবিক ভরণপোষণ (Maintenance) দিতে স্বামী বাধ্য।
চিকিৎসা ব্যয়: গর্ভাবস্থা ও সন্তান প্রসবের (Delivery) সমস্ত চিকিৎসা খরচও স্বামীকে বহন করতে হয়।
৪. সন্তানের আইনগত দিক
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সন্তানের অভিভাবকত্ব এবং ভরণপোষণের বিষয়টি কার্যকর হবে:
সন্তানের জন্ম: ডিভোর্স কার্যকর হওয়ার পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেও, আইনত সেই সন্তানের বাবা হবেন তালাকদাতা স্বামী।
ভরণপোষণ ও জিম্মা: সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের দায়িত্ব বাবার উপর বর্তাবে। সন্তানের জিম্মা (Custody)-এর বিষয়ে তখন প্রযোজ্য আইন (উপরে বিস্তারিত বলা হয়েছে) অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরামর্শ: যেহেতু গর্ভবতী অবস্থায় ডিভোর্স একটি সংবেদনশীল বিষয়, তাই সন্তানের আইনি ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একজন অভিজ্ঞ পারিবারিক আইনজীবীর মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি শুরু করা এবং দেনমোহর ও ভরণপোষণের বিষয়গুলো ভালোভাবে মিটমাট করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন