ডিভোর্স পেপারে কি লেখা থাকে

 ডিভোর্স পেপারে কি লেখা থাকে


"ডিভোর্স পেপার" বলতে মূলত তালাকের নোটিশ (Notice of Divorce)-কে বোঝানো হয়। বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১-এর ৭ ধারা অনুযায়ী এই নোটিশটি তৈরি ও জারি করা বাধ্যতামূলক।

এই নোটিশে নিম্নলিখিত অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা থাকে:


১. পক্ষগণের বিস্তারিত পরিচয়

তালাকদাতা (যিনি তালাক দিচ্ছেন) এবং তালাকগ্রহীতা (যাকে তালাক দেওয়া হচ্ছে) উভয়ের পূর্ণ পরিচয় ও ঠিকানার বিবরণ থাকে।

বিষয়বিবরণ
তালাকদাতার পরিচয়পুরো নাম, পিতার/স্বামীর নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা (বিশেষত যেখানে স্ত্রী বসবাস করেন)।
তালাকগ্রহীতার পরিচয়পুরো নাম, পিতার/স্বামীর নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা।
বিবাহের বিবরণবিবাহের তারিখ, কাবিননামা রেজিস্ট্রেশনের নম্বর, কাজীর নাম ও ঠিকানা।

২. তালাকের ঘোষণা ও কারণ

এটি নোটিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে তালাক ঘোষণার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়বিবরণ
তালাকের ঘোষণাস্পষ্টভাবে তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণা করা হয়। (যেমন: "আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিলাম" বা স্ত্রী হলে "আমি আমার অর্পিত ক্ষমতাবলে তালাক দিলাম")।
তালাকের কারণকেন তালাক দেওয়া হচ্ছে, তার সংক্ষিপ্ত কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করা হয় (যেমন: অমিল, মানসিক নির্যাতন, ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থতা ইত্যাদি)।
তালাকের তারিখ ও সময়তালাকটি কখন মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, সেই নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় উল্লেখ থাকে।

৩. দেনমোহর ও অন্যান্য আর্থিক বিষয়

তালাকের পর স্ত্রীর আর্থিক পাওনা নিয়ে একটি স্পষ্ট বিবৃতি থাকে।

বিষয়বিবরণ
দেনমোহরদেনমোহরের মোট পরিমাণ, কতটুকু পরিশোধ করা হয়েছে এবং কতটুকু বকেয়া আছে, তার বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। (তালাক কার্যকর হওয়ার সাথে সাথেই বকেয়া দেনমোহর পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক)
অন্যান্য পাওনাযদি থাকে, ইদ্দতকালীন সময়ের ভরণপোষণ বা সন্তানের ভরণপোষণ বিষয়ে সংক্ষেপে উল্লেখ থাকতে পারে। (খোলা তালাকের ক্ষেত্রে দেনমোহর ছাড়ের চুক্তিও উল্লেখ থাকে)।

৪. আইনি প্রক্রিয়া ও নোটিশের ঠিকানা

যেহেতু নোটিশটি আইন অনুযায়ী একাধিক ব্যক্তিকে পাঠাতে হয়, তাই ঠিকানার কলামগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিষয়বিবরণ
সাক্ষীদুইজন উপযুক্ত সাক্ষীর নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষর (তালাকের নোটিশে সাক্ষী আবশ্যক)।
তালাকদাতার স্বাক্ষরযিনি তালাক দিচ্ছেন, তার স্পষ্ট স্বাক্ষর।
প্রাপকের ঠিকানানোটিশটি নিম্নোক্ত দুটি ঠিকানায় পাঠানো হয়: ১. সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান/মেয়র (আইনি কর্তৃপক্ষ) এবং ২. তালাকগ্রহীতা (অপর পক্ষ)

সারসংক্ষেপ: এই "ডিভোর্স পেপার" বা তালাকের নোটিশটি মূলত একটি আইনি দলিল, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে যে একটি বিবাহবন্ধন ভেঙে যাচ্ছে এবং এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে যেন আইন অনুযায়ী ৯০ দিনের সালিশি প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।

সাধারণভাবে যাকে 'ডিভোর্স পেপার' বলা হয়, তা আসলে হলো তালাকের নোটিশ (Notice of Talaq)। বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুযায়ী তালাক কার্যকর করার জন্য এই নোটিশটি তৈরি এবং জারি করা বাধ্যতামূলক।

এই নোটিশে নিম্নলিখিত অত্যাবশ্যকীয় তথ্য ও বিষয়বস্তুগুলো লিখিত থাকে:


১. পক্ষগণের বিস্তারিত পরিচয়

ডিভোর্স পেপারের শুরুতেই স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হয়:

  • তালাক প্রদানকারীর নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা।

  • তালাক গ্রহীতার নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা।

  • বিবাহের তারিখ ও নিবন্ধনের তথ্য (কাবিননামা নম্বর)।

২. তালাকের ঘোষণা ও কারণ

এটি নোটিশের মূল অংশ, যেখানে কেন তালাক দেওয়া হচ্ছে তা স্পষ্টভাবে বলা হয়।

  • তালাকের ঘোষণা: স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে তালাকটি মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে কবে এবং কীভাবে (যেমন: 'তালাক' শব্দটি উচ্চারণ করে) ঘোষণা করা হয়েছে।

  • তালাকের কারণ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কী কারণে বনিবনা হচ্ছে না বা কী কারণে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত ও যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করতে হয় (যেমন: মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন, বনিবনা না হওয়া, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ইত্যাদি)।

৩. আইনি বাধ্যবাধকতা ও পদক্ষেপ

তালাকের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়:

  • দেনমোহর ও ভরণপোষণ: স্ত্রীর প্রাপ্য দেনমোহরের পরিমাণ (তাৎক্ষণিক ও বিলম্বিত) এবং তা কীভাবে পরিশোধ করা হয়েছে বা করা হবে, তার বিবরণ। যদি কোনো বকেয়া থাকে, তা পরিশোধের অঙ্গীকার থাকে।

  • ইদ্দতকাল: স্ত্রীকে ইদ্দতকাল (সাধারণত ৯০ দিন বা গর্ভবতী হলে গর্ভকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত) পালনের জন্য অনুরোধ করা হয়।

  • নোটিশ প্রেরণের উদ্দেশ্য: এটি উল্লেখ করা হয় যে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ধারা ৭ (Section 7) অনুসারে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান/মেয়র এবং অপর পক্ষকে নোটিশটি পাঠানো হচ্ছে।

৪. স্বাক্ষর ও সাক্ষী

  • তালাক প্রদানকারীর স্বাক্ষর: যিনি তালাক দিচ্ছেন, তার স্বাক্ষর ও টিপসই

  • সাক্ষী: তালাকের নোটিশে সাধারণত দুইজন উপযুক্ত সাক্ষীর নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষর উল্লেখ করা হয়।

৫. প্রেরকের ঠিকানা

নোটিশটি কাকে পাঠানো হচ্ছে তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকে, যেমন:

  • প্রাপক: সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান / পৌরসভার মেয়র / সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।

  • অনুলিপি (Copy to): তালাক গ্রহীতা (স্বামী বা স্ত্রী)।


সংক্ষেপে: ডিভোর্স পেপার (তালাক নোটিশ) হলো একটি আইনি দলিল, যার মাধ্যমে তালাকের সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় এবং অপর পক্ষকে অবহিত করা হয়, যাতে ৯০ দিনের সালিশি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন