সমাজকর্মের জনক কে উত্তর
সমাজকর্মের জনক হিসেবে সাধারণত মেরি রিচমন্ড (Mary Richmond)-কে বিবেচনা করা হয়।
মেরি রিচমন্ড কে এবং কেন তিনি সমাজকর্মের জনক?
মেরি রিচমন্ড ছিলেন একজন আমেরিকান সমাজকর্মী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ দিকে তিনি সমাজকর্মকে একটি পেশা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার দুটি বিখ্যাত বই, "Social Diagnosis" (১৯১৭) এবং "What is Social Case Work?" (১৯২২), সমাজকর্মের পদ্ধতি ও নীতিকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেয়।
"Social Diagnosis" বইটিতে তিনি একজন ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের জন্য সুসংগঠিতভাবে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং হস্তক্ষেপের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। এটিই আধুনিক কেসওয়ার্ক বা ব্যক্তি সমাজকর্মের ভিত্তি স্থাপন করে।
তিনি জোর দিয়েছিলেন যে, সমাজকর্মীদের শুধু মানুষের সমস্যা শোনা নয়, বরং সেই সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং পরিকল্পিত উপায়ে তা সমাধান করতে হবে।
মেরি রিচমন্ডের এই অবদানগুলো সমাজকর্মকে নিছক দাতব্য কার্যক্রম থেকে একটি পেশাদার ও বৈজ্ঞানিক শাস্ত্রে পরিণত করে, যার কারণে তাকে সমাজকর্মের জনক বলা হয়।
সমাজকর্মের জনক হিসেবে সাধারণত মেরি রিচমন্ড (Mary Richmond)-কে বিবেচনা করা হয়।
যদিও বহু মানুষ সমাজসেবায় অবদান রেখেছেন, মেরি রিচমন্ডই প্রথম ব্যক্তি যিনি সমাজকর্মকে একটি পেশাদার ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করেন। ১৯১৭ সালে প্রকাশিত তার বিখ্যাত বই "সোশ্যাল ডায়াগনোসিস (Social Diagnosis)" সমাজকর্মের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। এই বইটিতে তিনি একটি পদ্ধতিগত কাঠামো তুলে ধরেন, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি বা পরিবারের সমস্যা বিশ্লেষণ করে তার সমাধান করা যায়। তার এই কাজের মাধ্যমেই সমাজকর্ম শুধু দানশীলতা বা পরোপকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে একটি পেশাদার ও সুশৃঙ্খল বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
মেরি রিচমন্ডের মূল অবদান:
পেশাদার সমাজকর্মের ভিত্তি স্থাপন: তিনি দানশীলতার বদলে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া তৈরির উপর জোর দেন।
ব্যক্তিগত সমাজকর্ম (Casework) পদ্ধতির প্রবর্তন: তার কাজের ফলে সমাজকর্মীগণ প্রতিটি ব্যক্তির সমস্যাকে আলাদাভাবে বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট সমাধান দেওয়ার পদ্ধতি গড়ে তোলেন।
গবেষণা ও তাত্ত্বিক জ্ঞানকে গুরুত্ব দেওয়া: তিনি সমাজকর্মের অনুশীলনে অভিজ্ঞতাভিত্তিক গবেষণা এবং তাত্ত্বিক জ্ঞানের প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এ কারণে, আধুনিক সমাজকর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মেরি রিচমন্ডের নাম অগ্রগণ্য।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন