রোজা থেকে স্বামী স্ত্রী সহবাস করা যাবে
সংক্ষেপে উত্তর হলো:
দিনের বেলায় রোজা রেখে স্বামী-স্ত্রী সহবাস করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী, রোজা শুরু হওয়ার পর (সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত) পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা রোজার অন্যতম ফরজ।
দিনের বেলায় সহবাস করলে: রোজা ভেঙে যায়। এই ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাজা (পরবর্তীতে একটি রোজা রাখা) এবং কাফফারা (একটানা ষাটটি রোজা রাখা, অথবা ৬০ জন মিসকিনকে খাবার দান করা) উভয়ই ওয়াজিব হয়। এটি একটি বড় গুনাহের কাজ।
রাতের বেলায় সহবাস করা: ইফতারের পর থেকে শুরু করে সুবহে সাদিকের (ফজর শুরু হওয়ার) আগ পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর জন্য সহবাস করা সম্পূর্ণ হালাল বা বৈধ। এ ব্যাপারে কুরআনে অনুমতি দেওয়া হয়েছে (সূরা বাকারা: ১৮৭)। তবে সুবহে সাদিক হওয়ার আগেই গোসল করে নিতে হবে বা অন্তত গোসলের নিয়ত করতে হবে (যদি গোসল সম্ভব না হয়, তবে সুবহে সাদিকের পর গোসল করে নেওয়া যাবে, তবে সহবাসের পর ফরজ গোসল ছাড়া নামাজ পড়া যাবে না)।
সুতরাং, রোজা রাখা অবস্থায় অর্থাৎ দিনের বেলায় সহবাস করা যাবে না।
না, রোজা রাখা অবস্থায় অর্থাৎ দিনের বেলায় স্বামী-স্ত্রী সহবাস করা যাবে না।
রোজা ভঙ্গের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করা। যদি কেউ রোজা রেখে দিনের বেলা ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করেন, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং এর জন্য ইসলামে কঠোর বিধান রয়েছে।
বিধান:
যদি কেউ রমজান মাসে দিনের বেলায় রোজা রাখা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করেন, তাহলে তার উপর নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বর্তাবে:
১. সে গুনাহগার হবে।
২. তার সেদিনের রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
৩. তাকে সেদিনের বাকি অংশ পানাহার ও যৌনমিলন থেকে বিরত থেকে রোজার মতো থাকতে হবে (যদিও রোজাটি ভেঙে গেছে)।
৪. সেদিনের রোজাটি কাযা করতে হবে (রমজান মাস শেষ হওয়ার পর একটি রোজা রাখতে হবে)।
৫. এর সাথে কাফফারা আদায় করতে হবে।
কাফফারা হলো:
একটি ক্রীতদাস মুক্তি দেওয়া (যা বর্তমানে প্রযোজ্য নয়)।
তাতে সক্ষম না হলে, টানা দু'মাস (ষাট দিন) রোজা রাখতে হবে।
তাতেও সক্ষম না হলে, ষাট জন মিসকিনকে (গরীব মানুষকে) পেট ভরে খাদ্য দান করতে হবে।
তবে, রাতের বেলায় (ইফতারের পর থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত) সহবাস করা সম্পূর্ণ বৈধ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন:
"সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ।" (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন