শবে বরাতের রাতে স্বামী স্ত্রী
শবে বরাতের (লাইলাতুল বারাআত) রাতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়ে ইসলামে কোনো বিশেষ নিষেধাজ্ঞা বা বিশেষ আমলের নির্দেশ নেই। এটি মূলত একটি ইবাদতের রাত, যেখানে মুসলিমরা ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, জিকির, এবং নফল নামাজে মশগুল থাকে।
ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুসারে:
ইবাদতকে প্রাধান্য দেওয়া: শবে বরাতের রাতে মূল কাজ হলো নফল ইবাদত, যেমন নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ), কুরআন তিলাওয়াত, জিকির-আযকার এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে রাত জাগরণ করা। এই রাতে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই উচিত ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভে মনোযোগ দেওয়া।
দাম্পত্য সম্পর্ক: ইসলামের বিধান অনুযায়ী, যে কোনো সময়ে (শবে কদরের মতো বিশেষ ইবাদতের রাতেও) স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহবাস বা দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ। শবে বরাতও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে যেহেতু এটি একটি ইবাদতের রাত, তাই অধিকাংশ আলেমের মতে, রাতটিকে ইবাদতে কাটানোই উত্তম।
রোজা: শবে বরাতের পরের দিন (১৫ই শাবান) নফল রোজা রাখা সুন্নত। রোজা রাখার নিয়ত থাকলে ফজরের আগে পানাহার শেষ করতে হয়।
ফজরের নামাজ: স্বামী-স্ত্রী দু'জনেরই এই রাতে ইবাদত করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ফজরের নামাজ কোনো অবস্থাতেই কাজা না হয়ে যায়।
সংক্ষেপে, শবে বরাতের রাতে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন হালাল হলেও, রাতটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইবাদত করা। তাই সাধারণত এই রাতটিকে ইবাদতে কাটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে আপনি ইউটিউবে "শবে বরাতের রাতে স্বামী স্ত্রীর কাজ ইসলামিক বিধান" লিখে সার্চ করে ইসলামিক স্কলারদের আলোচনা দেখতে পারেন।
শবে বরাতের রাতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়ে ইসলামের মূল দিকগুলো হলো:
ইসলামে এই রাতটি নফল ইবাদত, ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তেগফার) এবং দোয়া কবুল হওয়ার একটি বিশেষ সুযোগ হিসেবে বিবেচিত। শবে বরাতের রাতে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করা বা না করার বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা বা বাধ্যবাধকতা নেই। এই রাত অন্যান্য নফল ইবাদতের রাতের মতোই।
করণীয় সম্পর্কে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ:
১. ইবাদতে মনোনিবেশ:
* এই রাতের প্রধান কাজ হলো ব্যক্তিগতভাবে (একাকী) নফল ইবাদত করা, যেমন: নফল নামাজ আদায়, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করা।
* নফল ইবাদত মসজিদে সমবেতভাবে না করে নিজ নিজ ঘরে একাকী করাই উত্তম।
২. দাম্পত্য সম্পর্ক:
* যেহেতু এই রাতকে ইবাদত ও ক্ষমা প্রার্থনার জন্য উৎসাহিত করা হয়, তাই বেশিরভাগ মানুষই ইবাদতে মগ্ন থাকেন। তবে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে শবে বরাত বা লাইলাতুল কদর (যেটি রমজানের শেষ দশকে পালিত হয়) কোনো রাতেই হারাম নয় বা নিষিদ্ধ নয়। এটি একটি বৈধ কাজ।
* যদি কোনো স্বামী-স্ত্রী এই রাতে ইবাদতের পর বা অন্য কোনো সময়ে স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে তাতে কোনো গুনাহ নেই। তবে ইবাদতকে যেন প্রাধান্য দেওয়া হয়।
৩. ক্ষমা প্রার্থনা ও দোয়া:
* রাসূলুল্লাহ (সা.) এই রাতে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করার কথা বলেছেন। মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আল্লাহ এই রাতে অনেককে ক্ষমা করে দেন।
৪. দিনে রোজা:
* শবে বরাতের পরের দিন (১৫ই শাবান) রোজা রাখা হাদিস দ্বারা উৎসাহিত করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপ হলো, শবে বরাতের রাতটি ইবাদত ও ক্ষমার রাত হলেও, এটি এমন কোনো রাত নয় যেখানে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করা নিষিদ্ধ। তবে উত্তম হলো রাতের অধিকাংশ সময় একাকী ইবাদতে কাটানো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন