বিয়ের প্রথম রাতে স্বামী স্ত্রী কি করে
বিয়ের প্রথম রাত, যা বাসর রাত নামে পরিচিত, তা নব দম্পতির জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র মুহূর্ত। ইসলাম ধর্মে এই রাতটিকে আনন্দ, ভালোবাসা ও ইবাদতের মাধ্যমে শুরু করার জন্য সুন্দর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ের প্রথম রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রধান করণীয়গুলো হলো:
১. ইবাদত ও দু'আ (Prayer and Supplication)
বিয়ের পর নতুন জীবনের শুরুতে আল্লাহর রহমত কামনা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
একসঙ্গে দুই রাকাত নামাজ: স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। স্বামী ইমামতি করবেন এবং স্ত্রী তার পেছনে দাঁড়াবেন। এটি নতুন সম্পর্কের জন্য আল্লাহর কাছে বরকত ও কল্যাণ প্রার্থনার একটি সুন্দর উপায়।
মাথায় হাত রেখে দু'আ: নামাজ শেষে স্বামী সস্নেহে স্ত্রীর কপালে ডান হাত রেখে আল্লাহর কাছে এই দু'আ পাঠ করবেন:
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা জাবালতাহা আলাইহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শার্রিহা ওয়া শার্রি মা জাবালতাহা আলাইহি।"
অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তার (স্ত্রীর) কল্যাণ এবং তার মধ্যে তুমি যে স্বভাব সৃষ্টি করেছ, তার কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর আমি তার ক্ষতি ও তার মধ্যে তুমি যে স্বভাব সৃষ্টি করেছ, তার ক্ষতি থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।" (আবু দাউদ)
২. আলাপ-পরিচয় ও মানসিক প্রস্তুতি
স্নেহপূর্ণ ব্যবহার: স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সাথে কোমল ও আমায়িক আচরণ করবেন। নতুন সঙ্গীটিকে স্বস্তি ও সাহস যোগাবেন। একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করবেন।
খোশগল্প: একে অপরের ভালো লাগা, মন্দ লাগা বা জীবনের গল্প নিয়ে খোশগল্প করতে পারেন, যাতে দুজনের মধ্যেকার জড়তা কেটে যায় এবং মানসিক সম্পর্ক গভীর হয়।
৩. সহবাসের ইসলামী নিয়ম (Guidelines for Intimacy)
যদি সহবাসের ইচ্ছা হয়, তবে ইসলামে কিছু সুন্নাহ ও আদব রয়েছে যা পালন করা উচিত:
সহবাসের পূর্বের দু'আ: সহবাসের আগে অবশ্যই আল্লাহর কাছে দু'আ পাঠ করা।
উচ্চারণ: "বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ শায়তা-না ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাজাকতানা।"
অর্থ: "আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আমাদের শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন, তাকেও শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।" (বুখারি, হাদিস: ১৪১)
পবিত্রতা: সহবাসের পর পবিত্রতা অর্জন (গোসল) করে ঘুমানো উত্তম। গোসলের সুযোগ না থাকলে অন্তত অজু করে ঘুমানো উচিত।
এই কাজগুলোর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী তাদের দাম্পত্য জীবনের শুরুটা আল্লাহর আনুগত্য, ভালোবাসা ও কল্যাণের পথে শুরু করতে পারেন।
আপনি যদি বাসর রাত বা দাম্পত্য জীবনের অন্য কোনো দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
বিয়ের প্রথম রাত, যা বাসর রাত নামে পরিচিত, তা স্বামী-স্ত্রীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র একটি রাত। ইসলামে এই রাতে করণীয় সম্পর্কে কিছু সুন্নাহ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে, যা মূলত নবদম্পতির জন্য কল্যাণ ও বরকত নিয়ে আসে।
✨ বিয়ের প্রথম রাতে স্বামী-স্ত্রীর করণীয় (ইসলামী দৃষ্টিকোণ)
বিয়ের প্রথম রাতে স্বামী-স্ত্রীর জন্য নিম্নলিখিত আমলগুলো করা উত্তম:
১. একত্রে দুই রাকাত সালাত (নফল নামাজ) আদায় করা
করণীয়: স্বামী নববধূকে নিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। স্বামী ইমামতি করবেন এবং স্ত্রী তার পেছনে দাঁড়াবেন। এটি মুস্তাহাব (উৎসাহিত কাজ)।
উদ্দেশ্য: নতুন জীবনের শুরুতেই আল্লাহর কাছে সাহায্য ও বরকত চাওয়া।
২. স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করা
করণীয়: স্বামী স্ত্রীর কপালে ডান হাত রেখে এই দোয়াটি পাঠ করবেন:
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা জাবালতাহা আলাইহি, ওয়া আ’উযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা জাবালতাহা আলাইহি।"
অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তার কল্যাণ এবং যে কল্যাণের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছো, তা প্রার্থনা করছি। আর তার অনিষ্ট ও যে অনিষ্টের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছো, তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।" (সুনানে আবু দাউদ)
৩. সহবাসের আগে দোয়া পড়া
যদি স্বামী-স্ত্রী শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে ইচ্ছুক হন, তবে সহবাসের আগে অবশ্যই এই দোয়াটি পড়া সুন্নত:
উচ্চারণ: "বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বান, ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাজা ক্তানা।"
অর্থ: "আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে রাখো এবং আমাদের যা দান করবে (অর্থাৎ সন্তান), তাকেও শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা করো।" (সহীহ বুখারী)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এই দোয়ার পর তাদের মিলনে কোনো সন্তান দান করা হলে, শয়তান কখনো তার ক্ষতি করতে পারবে না।
৪. কুশলাদি বিনিময় ও কোমল ব্যবহার
স্বামী স্ত্রীর সাথে সদয়, স্নেহময়, কোমল ও নম্র আচরণ করবেন। দু'জনের মধ্যে খোলামেলা, হাসিমুখে কথা বলা এবং একে অপরের খোঁজ-খবর নেওয়া উচিত।
প্রথম রাতে মিষ্টি পানীয় বা মিষ্টান্নের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
🚫 বর্জনীয়
স্ত্রীকে ভয় দেখানো বা জোর করা উচিত নয়।
শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শরীয়ত-বিরোধী কোনো কাজ করা যাবে না (যেমন ঋতুস্রাব চলাকালীন সহবাস)।
মূলত, এই রাতটিকে ইবাদত, কল্যাণ ও ভালোবাসার মাধ্যমে শুরু করাই ইসলামের প্রধান শিক্ষা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন