যে নারী স্বামীর সাথে জেদ করে

 যে নারী স্বামীর সাথে জেদ করে


স্বামীর সাথে জেদ করা নারীর চরিত্র বা আচরণকে অনেক সময় অবাধ্যতা (Nushuz) বা অকৃতজ্ঞতা হিসেবে দেখা হয়, যা দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। জেদ করার মাধ্যমে মূলত স্বামীর সিদ্ধান্ত বা চাহিদার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ পায়।

যে নারী স্বামীর সাথে জেদ করেন, তার আচরণের কিছু দিক এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হলো:

আচরণের দিক (ইসলামিক এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে):

  • অকৃতজ্ঞতা: হাদিস অনুযায়ী, কিছু নারী স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হন। সামান্য কিছু অপছন্দ হলেই তারা অভিযোগ করে বসেন যে স্বামীর কাছ থেকে কোনো ভালো ব্যবহার পাননি। জেদ বা অতিরিক্ত আবদার এই অকৃতজ্ঞতার প্রকাশ হতে পারে।

  • স্বামীর আনুগত্যে অনীহা: ইসলামে স্ত্রীকে বৈধ ও আইনানুগ কাজে স্বামীর আনুগত্য করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেদ করার প্রবণতা অনেক ক্ষেত্রে এই আনুগত্যের অভাব হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

  • মনোমালিন্য ও কলহ বৃদ্ধি: কথায় কথায় জেদ বা বাড়াবাড়ি করলে তা দাম্পত্য জীবনে কলহ, বিবাদ ও দূরত্ব সৃষ্টি করে।

  • বিছানায় আহ্বান প্রত্যাখ্যান: যদি স্ত্রী জেদ করে বা রাগের বশে স্বামীর শারীরিক আহ্বানে সাড়া না দেন, তবে তা গুরুতর সমস্যা বলে মনে করা হয়। হাদিসে এমন ক্ষেত্রে স্বামীর সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ফেরেশতারা নারীর ওপর অসন্তুষ্ট থাকেন বলে উল্লেখ আছে।

  • নেতিবাচক প্রভাব: এই ধরনের আচরণ স্বামীর জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে, যা সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদী খারাপ প্রভাব ফেলে।

সমস্যার সমাধান:

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হলো ভালোবাসা, সহনশীলতা ও বোঝাপড়ার। যদি স্ত্রী জেদী হন, তবে সমস্যা সমাধানের জন্য নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

  • খোলামেলা আলোচনা: জেদের কারণ কী—তা নিয়ে শান্তভাবে ও সৎভাবে আলোচনা করা উচিত। অনেক সময় স্ত্রী তার অনুভূতি বা চাওয়া সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পেরেই জেদ করেন।

  • উত্তম আচরণ: ইসলামে স্বামীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণ করতে, এমনকি অপছন্দ হলেও। স্বামীর পক্ষ থেকে সহনশীলতা ও ভালোবাসা স্ত্রীকে শান্ত করতে সাহায্য করতে পারে।

  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: যদি জেদ বা অবাধ্যতা খুব বেশি হয় এবং তা সাংসারিক শান্তির জন্য ক্ষতিকর হয়, তবে একজন পারিবারিক বা বৈবাহিক পরামর্শদাতার (Counselor) সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

মনে রাখা জরুরি যে, একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়ে তোলার জন্য স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের পক্ষ থেকে ছাড়, শ্রদ্ধা এবং আন্তরিকতা প্রয়োজন।

দাম্পত্য জীবনে জেদ বা একগুঁয়েমি একটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে যখন তা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যে নারী স্বামীর সাথে জেদ করেন বা জেদী হন, তার আচরণের কিছু দিক নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. নিজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত মনে করা: তিনি সব সময় তার নিজের মতকেই সঠিক মনে করেন এবং স্বামীর মতামতের তোয়াক্কা করেন না।

২. আলোচনায় অনিচ্ছা: কোনো বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা দিলে তিনি যুক্তি দিয়ে কথা বলার বদলে জেদ ধরে থাকেন এবং আলোচনার পথ বন্ধ করে দেন।

৩. রাগ বা নীরবতা ব্যবহার: নিজের কথা মানিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি হয়তো ঘন ঘন রাগ দেখান, চেঁচামেচি করেন, অথবা দীর্ঘ সময়ের জন্য নীরবতা (silent treatment) পালন করেন।

৪. স্বামীর অনুভূতিতে গুরুত্ব না দেওয়া: স্বামীর ভালো লাগা বা খারাপ লাগার চেয়ে নিজের চাহিদা পূরণের দিকেই বেশি মনোযোগ দেন।

৫. बार-बार অভিযোগ ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ: ছোটখাটো বিষয়েও স্বামীর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং অভিযোগ করতে থাকেন।

৬. ক্ষমা চাইতে অনীহা: নিজের ভুল হলেও তা স্বীকার করতে বা ক্ষমা চাইতে রাজি হন না।

৭. অবাস্তব প্রত্যাশা: স্বামীর কাছ থেকে এমন কিছু আশা করেন যা পূরণ করা কঠিন বা অসম্ভব, এবং পূরণ না হলে জেদ করেন বা মন খারাপ করেন।

মনে রাখা প্রয়োজন: জেদ বা একগুঁয়েমি প্রায়ই অন্য কোনো গভীর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় নিজেদের প্রয়োজন, আবেগ বা হতাশা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারার কারণেও মানুষ জেদ করে। সুস্থ সম্পর্কের জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই ধৈর্য, সহনশীলতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা জরুরি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন