বিয়ের কত দিনের মধ্যে ডিভোর্স দেওয়া যায়

 বিয়ের কত দিনের মধ্যে ডিভোর্স দেওয়া যায়


বাংলাদেশে বিয়ের পর ডিভোর্স দেওয়ার জন্য আইনগতভাবে কোনো নির্দিষ্ট সর্বনিম্ন সময়সীমা নেই। অর্থাৎ, বিয়ের পরের দিনই বা এক সপ্তাহ/এক মাস পরেও তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

তবে, ডিভোর্সের প্রক্রিয়াটি কার্যকর হওয়ার জন্য কিছু বাধ্যতামূলক সময়সীমা পার করতে হয়:

১. তালাক ঘোষণার পর কার্যকর হওয়ার সময়সীমা

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৭ ধারা অনুযায়ী, স্বামী বা স্ত্রী যেই তালাক দিক না কেন, তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়:

  • নোটিশ প্রদান: তালাক ঘোষণার পর যত দ্রুত সম্ভব চেয়ারম্যান/মেয়র/ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে (স্থায়ী ঠিকানার) লিখিত নোটিশ দিতে হবে এবং এর একটি অনুলিপি (কপি) অপর পক্ষকে পাঠাতে হবে।

  • ৯০ দিনের অপেক্ষা: চেয়ারম্যান/মেয়রের কাছে নোটিশ পৌঁছানোর তারিখ থেকে ঠিক ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এই ৯০ দিনের মধ্যে সালিশি বোর্ড সমঝোতার চেষ্টা করবে।

  • কার্যকর হওয়া: এই ৯০ দিনের মধ্যে যদি সমঝোতা না হয় বা কোনো পক্ষ তালাক প্রত্যাহার না করে, তাহলে ৯০ দিন পূর্ণ হওয়ার দিন তালাকটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

অর্থাৎ, আপনি বিয়ের পর যখনই তালাকের নোটিশ পাঠান না কেন, এটি আইনগতভাবে কার্যকর হতে কমপক্ষে ৯০ দিন সময় লাগবে।

২. তালাকের ইদ্দতকাল (স্ত্রীর ক্ষেত্রে)

তালাক কার্যকর হওয়ার পর একজন মুসলিম স্ত্রীকে অবশ্যই ইদ্দতকাল পালন করতে হয়, যার সময়সীমা হলো:

  • সাধারণ ক্ষেত্রে: তিনটি মাসিক চক্র (পিরিয়ড) বা বাংলাদেশী আইনে সাধারণত ৯০ দিন

  • যদি স্ত্রী গর্ভবতী হন: সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না এবং ইদ্দতকালও শেষ হবে না।

দ্রষ্টব্য: হিন্দু ধর্মে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের কোনো বিধান নেই। তবে, পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে অন্য কিছু আইনের অধীনে বিবাহ বাতিলের আবেদন করা যেতে পারে।

সংক্ষেপে:

বিষয়সময়সীমা
তালাক দেওয়ার সর্বনিম্ন সময় (বিয়ের পর)নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। (বিয়ের এক দিন পরও নোটিশ দেওয়া যায়)
তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য আবশ্যক সময়নোটিশ জারির তারিখ থেকে ৯০ দিন
স্ত্রীর ইদ্দতকাল (পুনরায় বিয়ের আগে)তালাক কার্যকর হওয়ার পর তিনটি মাসিক চক্র (প্রায় ৯০ দিন)

আপনি যদি আইনি প্রক্রিয়াটি শুরু করার কথা ভাবেন, তাহলে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

বাংলাদেশে বিয়ের কত দিনের মধ্যে ডিভোর্স দেওয়া যায়—এ বিষয়ে আইনে কোনো সর্বনিম্ন সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নেই।

এর মানে হলো:

বিয়ের এক দিন পরেও ডিভোর্স দেওয়া যায়, যদি সেই সিদ্ধান্ত আইনগতভাবে কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

তবে, ডিভোর্স বা তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।

ডিভোর্স কার্যকর হওয়ার আইনি প্রক্রিয়া

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য একটি ৯০ দিনের সময়সীমা মেনে চলতে হয়।

১. নোটিশ পাঠানো: স্বামী বা স্ত্রী (যদি কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা দেওয়া থাকে) যে পক্ষই তালাক দিক না কেন, তাকে প্রথমে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র/ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশ পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে বিপরীত পক্ষকেও একটি কপি পাঠাতে হবে।

২. সালিশি পরিষদ: নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান বা মেয়র পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আপস বা সমঝোতার জন্য একটি সালিশি পরিষদ গঠন করবেন।

৩. কার্যকর হওয়ার সময়: নোটিশ পাঠানোর তারিখ থেকে ৯০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তালাক স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে, যদি না এর মধ্যে আপস হয় বা তালাক প্রত্যাহার করা হয়।

সংক্ষেপে: বিয়ের সাথে সাথেই ডিভোর্সের ঘোষণা বা নোটিশ দেওয়া সম্ভব, তবে আইনিভাবে সম্পর্ক ছিন্ন হতে কমপক্ষে ৯০ দিন সময় লাগবে।

ব্যতিক্রম (স্ত্রীর ক্ষেত্রে):

  • আদালতের মাধ্যমে: যদি নিকাহনামার (কাবিননামা) ১৮ নম্বর কলামে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা (তালাক-এ-তাফويض) দেওয়া না থাকে, তবে স্ত্রীকে সরাসরি নোটিশ না পাঠিয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা (মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী) করতে হয়। আদালতের ডিক্রি পাওয়ার পর তা চেয়ারম্যানের কাছে গেলে সেই নোটিশ পাওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হয়।

যদি আপনি ডিভোর্সের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন