ডিভোর্স রাতে ইন বাংলাদেশ
বাংলাদেশে সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদের হার (Divorce Rate) উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। এই বৃদ্ধি বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক পরিবর্তনের ফল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) তথ্য এবং সিটি কর্পোরেশনের তথ্যের ভিত্তিতে ডিভোর্সের হার ও প্রবণতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশে ডিভোর্সের বর্তমান হার ও প্রবণতা
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাংলাদেশে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে, ডিভোর্সের হার ঊর্ধ্বমুখী।
মোট জনসংখ্যার অনুপাতে হার (Gross Divorce Rate): BBS এর 'বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস–২০২২' অনুযায়ী, ২০২২ সালে মোট জনসংখ্যার অনুপাতে ডিভোর্সের স্থূল হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪% (প্রতি হাজারে ১.৪ জন)। এটি ২০০৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ছিল ০.৬% থেকে ১.১%-এর মধ্যে।
ঢাকায় ডিভোর্সের প্রবণতা: রাজধানী ঢাকায় ডিভোর্সের হার সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন গড়ে ৩৭ থেকে ৫০টি দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে, অর্থাৎ প্রতি ৪০ মিনিটে প্রায় ১টি করে তালাকের ঘটনা ঘটছে।
আবেদনকারীদের লিঙ্গ: ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন সাধারণত নারীরাই বেশি করছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (২০২২ সালে) মোট আবেদনের প্রায় ৭০ শতাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (২০২২ সালে) প্রায় ৬৫ শতাংশ আবেদন ছিল স্ত্রীদের পক্ষ থেকে।
শিক্ষা ও অঞ্চলভেদে হার: শিক্ষিত দম্পতি এবং শহরাঞ্চলে ডিভোর্সের প্রবণতা বেশি দেখা গেলেও, সাম্প্রতিক জরিপে গ্রামেও ডিভোর্সের হার বেড়েছে। বিভাগভিত্তিক তথ্যে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে বিচ্ছেদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি এবং সিলেট বিভাগে কম।
ডিভোর্সের প্রধান কারণসমূহ (বিবিএস জরিপ অনুযায়ী)
বিবিএস-এর জরিপে তালাকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিভোর্সের প্রধান কারণগুলো উঠে এসেছে:
| প্রধান কারণ | উত্তরদাতাদের শতকরা হার (প্রায়) |
| বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক (পরকীয়া) | ২৩ শতাংশ |
| দাম্পত্য জীবন পালনে অক্ষমতা বা বনিবনার অভাব | ২২ শতাংশ |
| ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে অসামর্থ্য/অস্বীকৃতি | — |
| পারিবারিক চাপ ও হস্তক্ষেপ | — |
| শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন | — |
| যৌন অক্ষমতা বা অনীহা | — |
অন্যান্য কারণ:
নারীর স্বাবলম্বী হওয়া এবং নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা এখন সহিংসতা বা অসঙ্গত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন না।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগের অভাব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়া।
যৌতুক ও মাদকাসক্তি।
দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা (বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে)।
ডিভোর্সের হার বৃদ্ধি সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকে নির্দেশ করে, যেখানে নারীরা এখন তাদের অধিকার সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন ও স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এবং শিক্ষিত-কর্মজীবী দম্পতিদের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ্যণীয়।
ডিভোর্সের হার এবং প্রবণতা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশে ডিভোর্সের হার (BBS তথ্য অনুযায়ী)
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশে তালাকের হার বাড়ছে:
স্থূল তালাকের হার (Gross Divorce Rate): প্রতি হাজার জনসংখ্যায় তালাকের হার ২০২১ সালে ছিল ০.৭ জন। ২০২২ সালে এটি বেড়ে ১.৪ জনে দাঁড়িয়েছে। (২০২৩ সালে কিছুটা কমে ১.১% হয়েছিল বলে কিছু রিপোর্টে দেখা যায়)।
ঢাকায় তালাকের চিত্র:
রাজধানী ঢাকায় বিচ্ছেদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালে ঢাকা মহানগরীতে মোট ১৩,২৮৮টি তালাকের আবেদন পড়ে।
এর মানে হলো, ঢাকায় গড়ে প্রতি ৪০ মিনিটে একটি করে তালাক হয়েছে (২০২২ সালের তথ্য)।
২০২৩ সালে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে (উত্তর ও দক্ষিণ) ১৪,০০০ এরও বেশি ডিভোর্সের আবেদন জমা পড়েছে।
নারী কর্তৃক আবেদনের হার: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরাই ডিভোর্সের আবেদন করছেন। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট আবেদনের প্রায় ৬৫% থেকে ৭০% আসে স্ত্রীদের পক্ষ থেকে। এটিকে সমাজে নারীর সচেতনতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়।
ডিভোর্সের প্রধান কারণসমূহ
বিবিএস এবং বিভিন্ন গবেষণার জরিপে বিবাহবিচ্ছেদের বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। এর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হলো:
১. বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক (পরকীয়া): জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতাদের প্রায় ২৩% এটিকে বিচ্ছেদের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ঢাকা বিভাগে এই কারণে বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি।
২. দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতা বা বনিবনার অভাব: প্রায় ২২% ক্ষেত্রে এটি বিচ্ছেদের কারণ।
৩. পারিবারিক চাপ ও হস্তক্ষেপ: বিশেষ করে যৌথ পরিবারে বা শ্বশুরবাড়ির দিক থেকে আসা চাপ।
৪. শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন: নারীদের পক্ষ থেকে ডিভোর্সের আবেদনের অন্যতম কারণ।
৫. যৌন অক্ষমতা বা অনীহা।
৬. ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে স্বামীর অসামর্থ্য বা অস্বীকৃতি।
৭. আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন: বিশেষ করে নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ায় তারা একটি অসন্তুষ্ট সম্পর্ক চালিয়ে নিতে রাজি হচ্ছেন না।
অনেক সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং সামাজিক সচেতনতার কারণে নারীরা এখন বনিবনা না হলে বা নির্যাতনের শিকার হলে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
যদি আপনি ডিভোর্স প্রক্রিয়া বা এর কারণ সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান, তাহলে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন