অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা কে

 অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা কে


অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আদি শঙ্করাচার্য


অদ্বৈত বেদান্ত দর্শন

অদ্বৈত বেদান্ত হলো ভারতীয় দর্শনের ছয়টি প্রধান শাখার (আস্তিক দর্শন) মধ্যে অন্যতম। এই দর্শনের মূল ভিত্তি হলো 'অদ্বৈত' বা 'অ-দ্বৈত', যার অর্থ হলো 'দুই নয়' বা 'এক'। আদি শঙ্করাচার্য অষ্টম শতাব্দীতে এই দর্শনকে নতুন করে সুসংগঠিত ও জনপ্রিয় করে তোলেন।

এই দর্শনের মূল ধারণাগুলো হলো:

  • ব্রহ্মই একমাত্র সত্য: একমাত্র পরম সত্তা হলো ব্রহ্ম। এটি অদ্বিতীয়, নিরাকার এবং শাশ্বত।

  • জগৎ মিথ্যা: এই দৃশ্যমান জগৎ বা মায়া হলো এক ধরনের ভ্রম। এটি প্রকৃত সত্য নয়।

  • জীব ও ব্রহ্ম অভিন্ন: জীবাত্মা (ব্যক্তিগত আত্মা) এবং পরমাত্মা বা ব্রহ্মের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। জীবাত্মা কেবল অজ্ঞানতার কারণে নিজেকে ব্রহ্ম থেকে আলাদা মনে করে।

শঙ্করাচার্য এই দর্শনকে প্রচার করতে ভারতবর্ষের চার প্রান্তে চারটি মঠ স্থাপন করেন:

  • গোবর্ধন মঠ (পুরী, ওড়িশা)

  • শারদা মঠ (দ্বারকা, গুজরাট)

  • শৃঙ্গেরী মঠ (শৃঙ্গেরী, কর্ণাটক)

  • জ্যোতির্মঠ (বদ্রীনাথ, উত্তরাখণ্ড)

এই মঠগুলো আজও তার প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের প্রচার ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আদি শঙ্কর

তিনি অষ্টম শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে এই দার্শনিক মতবাদটি সুসংহত ও জনপ্রিয় করেন। আদি শঙ্করের অদ্বৈত দর্শন অনুসারে, চূড়ান্ত বাস্তবতা বা ব্রহ্ম (Brahman) হলো এক ও অদ্বিতীয় (অদ্বৈত)। ব্রহ্মই একমাত্র সত্য, আর এই দৃশ্যমান জগৎ হলো মায়া বা মিথ্যা। আত্মা (individual self) এবং ব্রহ্ম মূলত অভিন্ন।

অদ্বৈত দর্শনের মূল নীতি

  • ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা: এটি অদ্বৈত বেদান্তের মূল ভিত্তি। ব্রহ্মই একমাত্র সত্য এবং চিরন্তন, আর জগৎ একটি বিভ্রম বা মায়া।

  • জীবো ব্রহ্মৈব নাপরঃ: জীব (ব্যক্তিগত আত্মা) এবং ব্রহ্ম (পরম সত্তা) অভিন্ন। জীব ব্রহ্ম থেকে আলাদা নয়, বরং তারই অংশ।

  • জ্ঞান: অদ্বৈত বেদান্ত অনুসারে, মুক্তি বা মোক্ষ লাভের একমাত্র পথ হলো জ্ঞান। অজ্ঞানতার কারণে জীব নিজেকে ব্রহ্ম থেকে আলাদা মনে করে, আর জ্ঞান লাভ হলে এই অজ্ঞতা দূর হয় এবং জীব নিজের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করে।

আদি শঙ্কর চারটি প্রধান মঠ (গোবর্ধন মঠ, শারদা মঠ, জ্যোতির্মঠ এবং শৃঙ্গেরি মঠ) স্থাপন করেন, যা আজও অদ্বৈত বেদান্তের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন