ডিভোর্স দিতে কি কি কাগজ লাগে
ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কিছু অপরিহার্য কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এই কাগজপত্রের তালিকা নির্ভর করে মূলত আপনি কোন দেশে বা কোন আইনে (যেমন মুসলিম, হিন্দু বা খ্রিস্টান আইন) বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন তার ওপর।
বাংলাদেশে মুসলিম আইন (যা সাধারণত তালাকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) অনুযায়ী একজন পক্ষ থেকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ দিতে এবং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে প্রধানত নিম্নলিখিত কাগজপত্র বা তথ্যের প্রয়োজন হয়:
ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. প্রাথমিক ও অপরিহার্য দলিল
ডিভোর্সের নোটিশ (তালাকনামা) প্রস্তুত এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ) কাছে জমা দেওয়ার জন্য এই কাগজগুলো আবশ্যক:
কাগজের নাম | কেন প্রয়োজন |
নিকাহনামা বা কাবিননামার সত্যায়িত কপি | বিবাহিত সম্পর্ক প্রমাণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি ছাড়া ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু করা অসম্ভব। |
জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) কপি | স্বামী এবং স্ত্রীর উভয়ের পরিচয় ও ঠিকানা নিশ্চিত করার জন্য। |
বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ | বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিলের কপি, যা নোটিশ প্রেরণের জন্য দরকারি। |
ছবি | সাম্প্রতিক সময়ের পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাধারণত ২-৩ কপি)। |
২. নোটিশ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা
আইনগত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হলে নিম্নলিখিত দলিল বা পদক্ষেপগুলো গুরুত্বপূর্ণ:
পদক্ষেপ/দলিল | বিস্তারিত |
তালাক নোটিশ বা তালাকনামা | একজন আইনজীবীর মাধ্যমে প্রস্তুত করা নোটিশ, যা বিবাহবিচ্ছেদের কারণ উল্লেখ করে অন্য পক্ষকে প্রেরণ করা হবে। |
নোটিশ গ্রহণের প্রমাণ (প্রাপ্তিস্বীকারপত্র) | নোটিশটি অন্য পক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানোর পর এর প্রাপ্তিস্বীকারপত্র বা রসিদ (Acknowledgement Receipt) প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। |
উকিলের ক্ষমতাপত্র (Vakalatnama) | যদি আপনি কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন, তবে তাঁকে আইনি ক্ষমতা প্রদান করে এই দলিলে স্বাক্ষর করতে হবে। |
গুরুত্বপূর্ণ নোট
নোটিশের গন্তব্য: তালাক কার্যকর করার জন্য নোটিশটি এক কপি আপনার স্বামী/স্ত্রীকে এবং অন্য একটি কপি আপনি যে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, সেই এলাকার সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে পাঠাতে হবে।
কার্যকরের সময়সীমা: নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে যদি দুই পক্ষের মধ্যে কোনো আপস বা সমঝোতা না হয় এবং কোনো পক্ষ নোটিশ প্রত্যাহার না করে, তবে ৯০ দিন পর তালাক স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর বলে গণ্য হবে।
আপনার নির্দিষ্ট আইনি পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণার জন্য এবং প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রের সঠিক তালিকা পেতে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা আবশ্যক।
ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কিছু অপরিহার্য কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এই কাগজপত্রের তালিকাটি নির্ভর করে আপনি কোন আইন বা পদ্ধতি অনুসরণ করে ডিভোর্স দিচ্ছেন তার উপর। বাংলাদেশে মূলত মুসলিম বিবাহ ও তালাক (মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪ এবং পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুযায়ী) বা হিন্দু/খ্রিস্টান/বৌদ্ধ পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিচ্ছেদ হয়।
সাধারণভাবে, ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু করতে নিম্নলিখিত মূল কাগজপত্র এবং তথ্য প্রয়োজন:
ডিভোর্স আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল কাগজপত্র
১. বিবাহ সংক্রান্ত দলিল:
নিকাহনামার (কাবিননামা) সত্যায়িত কপি: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি প্রমাণ করে যে বিবাহটি আইনগতভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।
বিবাহের নিবন্ধন সনদ (Marriage Certificate) বা চার্চের সনদ (খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে): যদি নিকাহনামা না থাকে বা অন্য ধর্মাবলম্বী হন, তবে বিবাহের প্রমাণ হিসেবে এটি প্রয়োজন।
২. পরিচয়ের প্রমাণ ও ব্যক্তিগত তথ্য:
আবেদনকারীর (স্বামী/স্ত্রী) জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) কপি: উভয় পক্ষের পরিচয় নিশ্চিত করতে।
আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি (যদি NID না থাকে): বিকল্প প্রমাণ হিসেবে।
উভয় পক্ষের পূর্ণ নাম, ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ।
৩. বিচ্ছেদ সংক্রান্ত নোটিশ ও ডকুমেন্ট:
তালাক নোটিশের কপি: মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, তালাক কার্যকর করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের (যেমন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) কাছে পাঠানো লিখিত তালাক নোটিশের কপি এবং নোটিশ রসিদ।
তালাক ঘোষণার হলফনামা (Affidavit): যদি স্বামী তালাক দেন (বিশেষ করে তালাক-ই-তাফويض না থাকলে)।
তালাকের কারণ ব্যাখ্যা করে লিখিত আবেদন বা পিটিশন (মামলার ক্ষেত্রে): এটি হলফনামা আকারে হতে পারে।
৪. অন্যান্য অতিরিক্ত দলিল (প্রয়োজনে):
সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন সনদ: যদি দম্পতির কোনো সন্তান থাকে এবং সন্তানের অভিভাবকত্ব (Custody) বা ভরণপোষণ (Maintenance) সংক্রান্ত বিষয় জড়িত থাকে।
সম্পত্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র: যদি ডিভোর্সের মাধ্যমে যৌথ সম্পত্তির ভাগাভাগি বা দেনমোহর নিষ্পত্তির বিষয়টি জড়িত থাকে।
মেডিকেল রিপোর্ট/অন্যান্য প্রমাণ: যদি শারীরিক বা মানসিক নিষ্ঠুরতা বা অন্য কোনো নির্দিষ্ট কারণে ডিভোর্স চাওয়া হয়।
ডিভোর্সের প্রক্রিয়াভেদে করণীয়
কাগজপত্র প্রস্তুত করার আগে আপনি কোন প্রক্রিয়ায় ডিভোর্স দিচ্ছেন, তা জানা জরুরি:
১. মুসলিম বিবাহ (তালাক-ই-তাফويض ছাড়া):
স্বামী বা স্ত্রী (যদি তালাক-ই-তাফويضের ক্ষমতা থাকে) নোটিশ প্রস্তুত করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (যেমন সিটি কর্পোরেশন/ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান) এবং অপর পক্ষের কাছে প্রেরণ করবেন।
এই নোটিশের রসিদ ও কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
২. পারিবারিক আদালতে মামলা (অন্যান্য ধর্ম বা জটিলতার ক্ষেত্রে):
যদি পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হয় (যেমন হিন্দু বিবাহবিচ্ছেদ আইন বা খ্রিস্টান ডিভোর্স আইন অনুযায়ী, অথবা দেনমোহর/ভরণপোষণ/অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত জটিলতার কারণে), তবে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে উপযুক্ত আর্জি বা পিটিশন তৈরি করতে হবে।
এই পিটিশনের সঙ্গে নিকাহনামা/বিবাহ সনদের কপি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
ডিভোর্সের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং আইনগত। তাই, কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য অবশ্যই একজন পারিবারিক আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় সঠিক কাগজপত্রের তালিকা প্রদান করতে পারবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন