ডিএনএ এর আবিষ্কারক কে
ডিএনএ-এর গঠন (ডাবল হেলিক্স) আবিষ্কারের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত বিজ্ঞানী হলেন জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক। তাঁদের এই আবিষ্কারটি ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হয় এবং এর জন্য তাঁরা ১৯৬২ সালে শারীরতত্ত্ব বা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।
তবে, ডিএনএ প্রথম আবিষ্কার করেন সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক মিশার। ১৮৬৯ সালে তিনি মানব শ্বেত রক্তকণিকা নিয়ে গবেষণার সময় কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে একটি নতুন পদার্থের সন্ধান পান, যার নাম তিনি দিয়েছিলেন 'নিউক্লিন'। পরবর্তীতে এটিই ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) নামে পরিচিতি লাভ করে।
ডিএনএ আবিষ্কারের সাথে একাধিক বিজ্ঞানীর নাম জড়িত। প্রধানত, এর গঠন আবিষ্কারের জন্য জেমস ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক-কে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এর পেছনের মূল কাজ ছিল আরও কয়েকজন বিজ্ঞানীর।
ডিএনএ-এর আবিষ্কারের ইতিহাস
ফ্রিডরিখ মিয়েশার (Friedrich Miescher): ১৮৬৯ সালে এই সুইস রসায়নবিদ প্রথম শ্বেত রক্তকণিকা থেকে একটি নতুন ধরনের পদার্থ আলাদা করেন এবং এর নাম দেন "নিউক্লিন" (যা পরে ডিএনএ নামে পরিচিত হয়)। তিনিই প্রথম ডিএনএ-এর অস্তিত্ব শনাক্ত করেন।
জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক: ১৯৫৩ সালে এই দুই বিজ্ঞানী ডিএনএ-এর বিখ্যাত ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের ভিত্তি ছিল রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন এবং মরিস উইলকিন্সন-এর করা এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি গবেষণা, বিশেষ করে রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের তোলা একটি ছবি, যা "ছবি ৫১" (Photo 51) নামে পরিচিত। ওয়াটসন ও ক্রিক এই ছবি এবং অন্যান্য ডেটা ব্যবহার করে ডিএনএ-এর কাঠামো তৈরি করেন। এই যুগান্তকারী কাজের জন্য ওয়াটসন, ক্রিক ও উইলকিন্সনকে ১৯৬২ সালে শারীরবিদ্যা বা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। দুঃখজনকভাবে, ফ্র্যাঙ্কলিন পুরস্কার ঘোষণার আগেই মারা যান, এবং নোবেল পুরস্কার মরণোত্তর দেওয়া হয় না।
সংক্ষেপে, ডিএনএ-এর অস্তিত্ব প্রথম শনাক্ত করেন ফ্রেডরিখ মিয়েশার। কিন্তু এর দ্বি-সূত্রক বা ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কার করে জীববিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটান জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন