বাংলা ভাষার জনক কে
বাংলা ভাষার কোনো একজন একক জনক নেই। বাংলা ভাষা হাজার বছরের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজকের রূপ পেয়েছে। তবে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশের পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্তর রয়েছে, যেগুলোকে অনেকে বাংলা ভাষার আদি রূপ বলে মনে করেন।
বাংলা ভাষার উৎস
মাগধী প্রাকৃত: পণ্ডিতদের মতে, বাংলা ভাষা ইন্দো-আর্য ভাষার একটি শাখা, যা প্রাচীনকালে মাগধী প্রাকৃত থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এই মাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকেই বাংলা, অসমীয়া, ওড়িয়া এবং মৈথিলি ভাষার জন্ম হয়েছে।
ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: তিনি প্রমাণ করেছেন যে, বাংলা ভাষার উৎস হলো গৌড়ীয় প্রাকৃত।
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়: তার মতে, বাংলা ভাষা এসেছে মাগধী প্রাকৃত থেকে। এই দুই প্রথিতযশা ভাষাবিদের ভিন্ন মত থাকলেও, উভয়ই একমত যে প্রাকৃত ভাষা থেকেই বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে।
সুতরাং, বাংলা ভাষা কোনো একক ব্যক্তির সৃষ্টি নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘ বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফসল।
বাংলা ভাষার কোনো একজন একক জনক নেই। এটি একটি দীর্ঘ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসেছে। তবে বাংলা ভাষার উৎপত্তির জন্য দুটি প্রধান তত্ত্ব প্রচলিত আছে।
১. ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতবাদ:
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে, যা প্রাকৃত ও অপভ্রংশের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়ে এসেছে। তার মতে, মাগধী অপভ্রংশ থেকেই বাংলা ভাষার জন্ম।
২. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতবাদ:
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে গৌড়ীয় অপভ্রংশ থেকে, যা মাগধী অপভ্রংশ থেকে আলাদা।
সুতরাং, এই দুই ভাষাবিদকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি নিয়ে গবেষণার পথিকৃৎ হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু কোনো একক ব্যক্তিকে বাংলা ভাষার জনক বলা হয় না। বাংলা ভাষা একটি জীবন্ত নদীর মতো, যা বহু শতক ধরে পরিবর্তিত ও বিকশিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন