ঈশ্বর কণার আবিষ্কারক কে
ঈশ্বর কণার (Higgs boson) আবিষ্কারক হলেন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী পিটার হিগস (Peter Higgs)।
আবিষ্কারের প্রেক্ষাপট
১৯৬৪ সালে পিটার হিগস সহ আরও কয়েকজন বিজ্ঞানী একটি তত্ত্ব প্রস্তাব করেন, যেখানে তারা একটি বিশেষ কণার অস্তিত্বের কথা বলেন যা অন্যান্য মৌলিক কণাকে ভর প্রদান করে। এই কণাটিই পরে হিগস বোসন নামে পরিচিতি পায়। ২০১২ সালে জেনেভার CERN-এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (Large Hadron Collider) যন্ত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে এই কণার অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়।
কেন এটিকে 'ঈশ্বর কণা' বলা হয়?
'ঈশ্বর কণা' নামটি আসলে একটি জনপ্রিয় উপাধি, যা পিটার হিগস নিজে দেননি। নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী লিওন লেডারম্যান তার বই "The God Particle: If the Universe Is the Answer, What is the Question?"-এ এই নামটি ব্যবহার করেন। তার মতে, এই কণাটি খুঁজে বের করা এতটাই কঠিন ছিল এবং এটি মহাবিশ্বের মৌলিক কাঠামো বোঝার জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ যে এটিকে এই নাম দেওয়া হয়েছে।
সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ভূমিকা
অনেক সময় বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু-এর নামও এই কণার সাথে যুক্ত হয়। এর কারণ হলো, হিগস বোসন কণাটি 'বোসন' নামক এক শ্রেণির কণার অন্তর্ভুক্ত, যেগুলোর আচরণ বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান মেনে চলে। আর এই পরিসংখ্যানের তত্ত্বের প্রধান প্রবক্তা ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। তাই এই শ্রেণির কণাগুলোকে তার নামানুসারে 'বোসন' বলা হয়। কিন্তু হিগস বোসনের অস্তিত্বের তত্ত্ব বা তার আবিষ্কারে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সরাসরি কোনো ভূমিকা ছিল না।
'ঈশ্বর কণা'র (God Particle) আবিষ্কারক হলেন পিটার হিগস (Peter Higgs), একজন ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিদ।
আবিষ্কারের প্রেক্ষাপট
১৯৬৪ সালে পিটার হিগস সহ বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী একটি তত্ত্ব প্রস্তাব করেন, যা ব্যাখ্যা করে কেন কিছু মৌলিক কণার ভর আছে। এই তত্ত্ব অনুসারে, একটি সর্বব্যাপী ক্ষেত্র (Higgs field) আছে যা মহাবিশ্বের সবকিছুকে ঘিরে রেখেছে। এই ক্ষেত্রের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে কণাগুলো ভর লাভ করে। যে কণাটি এই মিথস্ক্রিয়াকে বহন করে, তার নাম দেওয়া হয় হিগস বোসন (Higgs Boson)।
অনেক বছর ধরে বিজ্ঞানীরা এই কণার অস্তিত্বের জন্য প্রমাণ খুঁজছিলেন। অবশেষে, ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ (CERN) এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (Large Hadron Collider) নামক গবেষণাগারে এই কণার অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়।
এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য পিটার হিগস এবং বেলজিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রাঁসোয়া এংলার্ট (François Englert) ২০১৩ সালে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
'বোসন' নামের উৎস
হিগস বোসন কণার নামের "বোসন" অংশটি এসেছে বিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম থেকে। তিনি এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইন মিলে যে পরিসংখ্যান তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন, তার নাম বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান (Bose-Einstein Statistics)। যে সকল কণা এই পরিসংখ্যান মেনে চলে, তাদের "বোসন" বলা হয়। হিগস বোসনও এই শ্রেণীর একটি কণা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন