ভারতের পরিকল্পনা অঞ্চলের জনক কে
ভারতের পরিকল্পনা অঞ্চলের জনক বলতে সাধারণত স্যার এম. বিশ্বেশ্বরায়া (Sir M. Visvesvaraya)-কে বোঝানো হয়।
তিনি একজন প্রখ্যাত প্রকৌশলী এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৩৪ সালে তার লেখা বিখ্যাত বই "Planned Economy for India" (ভারতের জন্য পরিকল্পিত অর্থনীতি)-তে তিনি ভারতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি সুসংগঠিত এবং পরিকল্পিত পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। এই বইটি ভারতের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তার এই দূরদর্শী চিন্তাভাবনার জন্যই তাকে "ভারতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার জনক" (Father of Indian Economic Planning) হিসেবে অভিহিত করা হয়।
যদিও স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর তত্ত্বাবধানে পরিকল্পনা কমিশন গঠিত হয় এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, বিশ্বেশ্বরায়ার ধারণাই এই পুরো প্রক্রিয়ার মূল ভিত্তি ছিল।
এছাড়াও, ভারতের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার স্থপতি হিসেবে প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ (P. C. Mahalanobis)-কেও উল্লেখ করা হয়, বিশেষ করে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (1956-1961) জন্য, যা শিল্পায়নের উপর জোর দিয়েছিল। কিন্তু "পরিকল্পনা অঞ্চলের জনক" হিসেবে বিশ্বেশ্বরায়ার নামই বেশি প্রচলিত।
ভারতের পরিকল্পনা অঞ্চলের জনক বলতে সাধারণত এমন কোনো একক ব্যক্তিকে বোঝানো হয় না। বরং, ভারতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের সাথে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়ে আছে।
যাইহোক, যদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ধারণার প্রবর্তক হিসেবে ধরা হয়, তাহলে স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরাইয়া (Sir Mokshagundam Visvesvaraya)-কে ভারতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার জনক বলা যেতে পারে।
স্যার এম. বিশ্বেশ্বরাইয়া (Sir M. Visvesvaraya): ১৯৩৪ সালে তার লিখিত গ্রন্থ "Planned Economy for India" (ভারতের জন্য পরিকল্পিত অর্থনীতি)-তে তিনি ভারতে ১০ বছর মেয়াদী একটি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার রূপরেখা দেন। এটিই ভারতে একটি সুসংগঠিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রথম প্রস্তাব ছিল।
এছাড়াও, ভারতের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার স্থপতি হিসেবে আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখযোগ্য:
জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Nehru): তিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিকল্পনা কমিশন (Planning Commission) প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। তার সমাজতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার উপর ভিত্তি করেই ভারতে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চালু হয়।
প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ (Prasanta Chandra Mahalanobis): পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে তিনি দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (1956–1961) মূল স্থপতি ছিলেন। তার প্রণীত 'মহালানবিশ মডেল' দ্রুত শিল্পায়ন এবং ভারী শিল্পের উপর জোর দিয়েছিল।
সুতরাং, যদিও স্যার এম. বিশ্বেশ্বরাইয়া-কে ভারতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার পথিকৃৎ হিসেবে ধরা হয়, তবে প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ-কে আধুনিক ভারতীয় পরিকল্পনার স্থপতি হিসেবে গণ্য করা হয়।
إرسال تعليق