বিদ্যুৎ আবিষ্কারক কে নাম

 বিদ্যুৎ আবিষ্কারক কে নাম


বিদ্যুৎ আবিষ্কারের একক কোনো আবিষ্কারক নেই, কারণ এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন সময়ে অনেক বিজ্ঞানী এর রহস্য উন্মোচন ও ব্যবহারযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তবে কিছু প্রধান ব্যক্তিত্বের নাম এখানে উল্লেখ করা হলো:

  • বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (Benjamin Franklin): ১৭৫২ সালে তিনি তার বিখ্যাত ঘুড়ি পরীক্ষার মাধ্যমে বজ্রপাত এবং বিদ্যুতের মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণ করেন। তিনি দেখান যে বজ্রপাত আসলে এক ধরনের বিদ্যুৎ, যা স্থির বিদ্যুৎ (Static Electricity)। তার এই আবিষ্কার বিদ্যুৎকে গবেষণার একটি নতুন দিকে পরিচালিত করে।

  • আলেসান্দ্রো ভোল্টা (Alessandro Volta): ১৮০০ সালে ইতালীয় বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টা প্রথম বৈদ্যুতিক ব্যাটারি আবিষ্কার করেন, যা "ভোল্টাইক পাইল" (Voltaic Pile) নামে পরিচিত। তার এই আবিষ্কারের ফলে প্রথমবারের মতো একটি অবিচ্ছিন্ন এবং নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ প্রবাহ তৈরি করা সম্ভব হয়। এর আগে বিদ্যুৎ নিয়ে যে গবেষণা হতো, তা ছিল মূলত স্থির বিদ্যুৎ নিয়ে। ভোল্টার ব্যাটারি আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের ভিত্তি স্থাপন করে। তার নামানুসারেই বিদ্যুতের বিভব পার্থক্য পরিমাপের একক 'ভোল্ট' (Volt) নামকরণ করা হয়েছে।

  • মাইকেল ফ্যারাডে (Michael Faraday): ১৮২০-১৮৩০ এর দশকে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতি, "তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ" (Electromagnetic Induction) আবিষ্কার করেন। এই নীতির উপর ভিত্তি করে জেনারেটর এবং ট্রান্সফরমার তৈরি করা হয়েছে, যা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও দূরবর্তী স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। আধুনিক বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণে তার অবদান অপরিসীম।

  • নিকোলা টেসলা (Nikola Tesla) এবং টমাস এডিসন (Thomas Edison): আধুনিক বিদ্যুৎ বিতরণের ক্ষেত্রে এই দুজন বিজ্ঞানীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এডিসন ডিসি (DC - Direct Current) বিদ্যুৎ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন, যা প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহৃত হতো। অন্যদিকে, নিকোলা টেসলা এসি (AC - Alternating Current) বিদ্যুৎ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন, যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হচ্ছে। এসি বিদ্যুৎ দীর্ঘ দূরত্বে অনেক সহজে এবং কম খরচে সরবরাহ করা যায়।

তাই, যদি বিদ্যুৎ আবিষ্কারের কৃতিত্ব কাউকে এককভাবে দিতেই হয়, তাহলে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর নাম আসবে। তবে বিদ্যুতের ব্যবহারিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে আলেসান্দ্রো ভোল্টা এবং মাইকেল ফ্যারাডে-এর অবদানকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়।

বিদ্যুৎ কোনো একক ব্যক্তির আবিষ্কার নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফল যেখানে বহু বিজ্ঞানী ও গবেষকের অবদান রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানীরা বিদ্যুতের বিভিন্ন রূপ ও বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছেন, যার ফলে আধুনিক বিদ্যুতের ব্যবহার সম্ভব হয়েছে।

তবে, বিদ্যুতের ইতিহাসের কিছু প্রধান নাম নিচে দেওয়া হলো:

  • থ্যালেস অফ মিলেতাস (Thales of Miletus): খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে এই গ্রিক দার্শনিক প্রথম স্থির বিদ্যুতের (Static Electricity) অস্তিত্ব লক্ষ্য করেন। তিনি অ্যাম্বার নামক রজনকে পশমের সঙ্গে ঘষলে তা পালকের মতো হালকা বস্তুকে আকর্ষণ করে, এটি আবিষ্কার করেন।

  • বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (Benjamin Franklin): ১৭৫২ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদ বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তাঁর বিখ্যাত ঘুড়ি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে বজ্রপাত আসলে এক ধরনের বিদ্যুৎ। এই আবিষ্কার বিদ্যুৎ গবেষণার ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।

  • আলেসান্ড্রো ভোল্টা (Alessandro Volta): ইতালীয় বিজ্ঞানী আলেসান্ড্রো ভোল্টা ১৮০০ সালে প্রথম বৈদ্যুতিক ব্যাটারি বা 'ভোল্টাইক পাইল' (Voltaic Pile) আবিষ্কার করেন। তার এই আবিষ্কারের ফলে প্রথমবারের মতো অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহ তৈরি করা সম্ভব হয়, যা আধুনিক বিদ্যুতের ভিত্তি স্থাপন করে।

  • মাইকেল ফ্যারাডে (Michael Faraday): ১৯ শতকে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন (Electromagnetic Induction) আবিষ্কার করেন। এই নীতির উপর ভিত্তি করেই আজকের সব ডায়নামো এবং জেনারেটর তৈরি করা হয়েছে, যা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। তাই অনেকে মাইকেল ফ্যারাডেকে "বিদ্যুতের জনক" বলে মনে করেন।

  • থমাস আলভা এডিসন (Thomas Alva Edison): আমেরিকান উদ্ভাবক এডিসন বৈদ্যুতিক বাতি (Electric Bulb) এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা (Power Distribution System) তৈরি করেন। তিনি বিদ্যুতের ব্যবহারকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলেন।

সংক্ষেপে, বলা যায় যে, বিদ্যুৎ আসলে আবিষ্কারের চেয়ে বেশি "উদ্ভাবন ও উন্নয়নের" ফল, যা হাজার বছর ধরে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর অবদানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন