মেয়েদের তলপেটের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়
মেয়েদের তলপেটের বাম পাশে ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু কারণ সাধারণ এবং স্বাভাবিক, আবার কিছু কারণ আরও গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে।
সাধারণ কিছু কারণ:
মাসিকের ব্যথা (Menstrual cramps): এটি সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে একটি। মাসিকের সময় জরায়ুর সংকোচনজনিত কারণে তলপেটের বাম বা ডান পাশে ব্যথা হতে পারে।
ডিম্বস্ফোটনের ব্যথা (Ovulation pain): মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়ে (ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার সময়) তলপেটের একপাশে হালকা ব্যথা হতে পারে। একে 'মিটেলশমার্জ' (Mittelschmerz) বলা হয়।
গ্যাস বা বদহজম: পেটে গ্যাস জমা হলে বা হজমের সমস্যা হলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য: দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণেও পেটে চাপ পড়ে ব্যথা হতে পারে।
নারীরোগ সংক্রান্ত কিছু কারণ:
ডিম্বাশয়ের সিস্ট (Ovarian cyst): ডিম্বাশয়ে সিস্ট তৈরি হলে তলপেটের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে যদি সিস্টটি বড় হয় বা ফেটে যায়।
এন্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis): এমন একটি অবস্থা যেখানে জরায়ুর আস্তরণের মতো টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়, যার ফলে তীব্র তলপেটে ব্যথা হয়।
পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID): প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণ যা তলপেটে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এটি সাধারণত যৌনবাহিত সংক্রমণের কারণে হয়।
এক্টোপিক প্রেগনেন্সি (Ectopic Pregnancy): যখন নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর বাইরে, সাধারণত ফ্যালোপিয়ান টিউবে বেড়ে ওঠে, তখন এটি একটি জরুরি অবস্থা এবং তলপেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
ডিম্বাশয়ের মোচড় (Ovarian torsion): যখন ডিম্বাশয় পেঁচিয়ে যায়, তখন রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে তীব্র ব্যথা হয়। এটি একটি জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
অন্যান্য গুরুতর কারণ:
কিডনিতে পাথর (Kidney stones): কিডনিতে পাথর থাকলে সেই ব্যথা তলপেটের বাম পাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ডাইভার্টিকুলাইটিস (Diverticulitis): অন্ত্রের ছোট ছোট থলিতে প্রদাহ হলে পেটের বাম পাশে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI): মূত্রনালীর সংক্রমণের কারণে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
হার্নিয়া (Hernia): পেটের পেশী দুর্বল হলে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বাইরে বেরিয়ে আসার ফলে হার্নিয়া হয়, যা ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত:
যদি ব্যথা হালকা এবং ক্ষণস্থায়ী হয়, তাহলে সাধারণত চিন্তার কিছু নেই। তবে যদি ব্যথা তীব্র হয়, কয়েক দিন ধরে থাকে, বা এর সাথে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:
জ্বর
বমি বমি ভাব বা বমি
রক্তক্ষরণ
পেটের স্পর্শকাতরতা
অন্যান্য উপসর্গ, যেমন প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা অস্বাভাবিক স্রাব।
মনে রাখা জরুরি যে, সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
إرسال تعليق