মেয়েদের থাইরয়েড এর লক্ষণ 2025
থাইরয়েড একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি নারী ও পুরুষ উভয়ের শরীরেই ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। নারীদের ক্ষেত্রে, হরমোনের পরিবর্তনের কারণে থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা বেশি দেখা যায়। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে প্রধানত দুই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়: হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোন কম নিঃসরণ) এবং হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোন বেশি নিঃসরণ)।
হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) এর লক্ষণ
যখন থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম হরমোন তৈরি করে, তখন এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়:
ক্লান্তি ও দুর্বলতা: সারাদিন ক্লান্তি অনুভব করা, পর্যাপ্ত ঘুমের পরও সতেজ না হওয়া।
ওজন বৃদ্ধি: স্বাভাবিক খাবার বা কম খাওয়া সত্ত্বেও ওজন বেড়ে যাওয়া।
ঠান্ডা অসহিষ্ণুতা: স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও প্রচণ্ড শীত অনুভব করা।
ত্বক ও চুলের পরিবর্তন: ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যাওয়া, চুল পড়া এবং চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া।
মাসিকের সমস্যা: মাসিক চক্র অনিয়মিত হওয়া, বেশি পরিমাণে রক্তপাত হওয়া অথবা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
বিষণ্ণতা ও মানসিক পরিবর্তন: মেজাজ খারাপ থাকা, মনমরা ভাব বা বিষণ্ণতায় ভোগা।
কোষ্ঠকাঠিন্য: হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হওয়া।
পেশী ও জয়েন্টে ব্যথা: পেশী ও অস্থিসন্ধিতে হালকা ব্যথা বা ক্র্যাম্প হওয়া।
গলার স্বর পরিবর্তন: গলার স্বর বসে যাওয়া বা কর্কশ হয়ে যাওয়া।
হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism) এর লক্ষণ
যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত পরিমাণে হরমোন তৈরি করে, তখন এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়:
ওজন হ্রাস: পর্যাপ্ত খাওয়া সত্ত্বেও হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া।
দ্রুত হৃদস্পন্দন: হৃদপিণ্ডের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়া, বুক ধড়পড় করা।
গরম অসহিষ্ণুতা: সামান্য গরমেই অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এবং অস্বস্তি অনুভব করা।
উদ্বেগ ও অস্থিরতা: নার্ভাস লাগা, অতিরিক্ত উদ্বেগ, অস্থিরতা বা উত্তেজনা অনুভব করা।
মাসিকের সমস্যা: মাসিক হালকা হওয়া, অনিয়মিত হওয়া বা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
ঘুমের সমস্যা: রাতে ঘুম না হওয়া বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা।
চোখের সমস্যা: চোখ ফোলা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া।
হাতে কাঁপুনি: হাত কাঁপা বা মৃদু কম্পন হওয়া।
পেটে সমস্যা: ঘন ঘন পায়খানা হওয়া বা ডায়রিয়া হওয়া।
যদি উপরের কোনো লক্ষণ আপনার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য রক্তের টিএসএইচ (TSH), টি৩ (T3) এবং টি৪ (T4) হরমোন পরীক্ষা করা জরুরি।
থাইরয়েড একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা আমাদের শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই হতে পারে, তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ হলো মহিলাদের হরমোন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রভাবিত করতে পারে।
থাইরয়েড সমস্যা সাধারণত দুই ধরনের হয়:
হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism): যখন থাইরয়েড গ্রন্থি প্রয়োজনের তুলনায় কম হরমোন তৈরি করে।
হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism): যখন থাইরয়েড গ্রন্থি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হরমোন তৈরি করে।
মহিলাদের থাইরয়েড সমস্যার সাধারণ লক্ষণ
যেহেতু থাইরয়েড শরীরের অনেক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে, এর লক্ষণগুলোও অনেক ধরনের হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেওয়া হলো যা মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়:
হাইপোথাইরয়েডিজম (Underactive Thyroid) এর লক্ষণ
এই অবস্থায় শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। তাই লক্ষণগুলোও সাধারণত ধীর গতিতে হয়।
শারীরিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা: কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করা।
ওজন বৃদ্ধি: খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাপনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ওজন বেড়ে যাওয়া।
ঠান্ডা অসহিষ্ণুতা: স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা।
ত্বক ও চুলের সমস্যা: ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়া বা চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
মাসিকের সমস্যা: মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া বা মাসিক অনিয়মিত হওয়া।
বিষণ্ণতা ও স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা: মন খারাপ থাকা, বিষণ্ণতায় ভোগা এবং মনোযোগ বা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া।
কোষ্ঠকাঠিন্য: হজম প্রক্রিয়া ধীর হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়।
হাইপারথাইরয়েডিজম (Overactive Thyroid) এর লক্ষণ
এই অবস্থায় শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া দ্রুত হয়ে যায়। তাই লক্ষণগুলোও সাধারণত দ্রুত গতিতে হয়।
ওজন হ্রাস: পর্যাপ্ত খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।
দ্রুত হৃদস্পন্দন: বুক ধড়ফড় করা বা হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া।
অতিরিক্ত ঘাম ও গরম লাগা: গরম সহ্য করতে না পারা এবং বেশি ঘাম হওয়া।
উদ্বেগ ও অস্থিরতা: হঠাৎ করে নার্ভাস বা উত্তেজিত অনুভব করা, অস্থির থাকা।
মাসিকের সমস্যা: মাসিক অনিয়মিত হওয়া বা মাসিকের প্রবাহ হালকা হয়ে যাওয়া।
হাতে কাঁপুনি: হাত কাঁপা বা শরীর কাঁপতে থাকা।
ঘুমের সমস্যা: রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হওয়া।
যদি আপনার এই লক্ষণগুলোর কোনোটি দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েডের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করলে এর জটিলতা এড়ানো যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন