মেয়েদের আকিকা দেওয়ার নিয়ম
মেয়েদের আকিকা দেওয়ার নিয়মাবলী নিচে দেওয়া হলো:
আকিকা হলো নবজাতকের পক্ষ থেকে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করার জন্য পশু জবাই করা। এটি একটি সুন্নাত আমল। ছেলে ও মেয়ের আকিকার নিয়মে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
মেয়েদের আকিকার নিয়ম:
পশুর সংখ্যা: মেয়ের আকিকার জন্য একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করতে হয়। ছেলের আকিকার জন্য দুটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করা হয়। গরু বা উটের ক্ষেত্রে, একটি গরুর সাত ভাগের এক ভাগ বা একটি উটের সাত ভাগের এক ভাগ একটি মেয়ের আকিকার জন্য যথেষ্ট। যদি একাধিক মেয়ের আকিকা একসাথে করা হয়, তাহলে প্রতি মেয়ের জন্য একটি করে ছাগল/দুম্বা অথবা গরুর/উটর সাত ভাগের এক ভাগ করে দিতে হবে।
সময়:
আকিকা সাধারণত সপ্তম দিনে করা উত্তম। অর্থাৎ, শিশু জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা দেওয়া মুস্তাহাব।
যদি সপ্তম দিনে সম্ভব না হয়, তাহলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে আকিকা দেওয়া যেতে পারে।
যদি এই দিনগুলোতেও সম্ভব না হয়, তাহলে শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেও যেকোনো সময় আকিকা দেওয়া জায়েজ। এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও যদি সামর্থ্য হয়, তবে আকিকা দেওয়া যায়।
পশুর ধরণ ও বয়স:
ছাগল বা দুম্বা হতে হবে সুস্থ ও ত্রুটিমুক্ত।
ছাগল বা দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে।
গরু বা উটের ক্ষেত্রে, গরুর বয়স কমপক্ষে দুই বছর এবং উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে।
নাম রাখা: আকিকার দিন শিশুর সুন্দর একটি ইসলামিক নাম রাখা মুস্তাহাব।
চুল মুণ্ডন: সপ্তম দিনে শিশুর মাথার চুল মুণ্ডন করা এবং চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য (রূপা) সদকা করা মুস্তাহাব। এটি ছেলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
মাংসের ব্যবহার:
আকিকার মাংস তিন ভাগে ভাগ করা উত্তম: এক ভাগ গরিব-মিসকিনদের, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের এবং এক ভাগ নিজেরা খাওয়া।
এই মাংস রান্না করে বিতরণ করা যেতে পারে অথবা কাঁচা মাংসও বিতরণ করা যায়।
আকিকার মাংস ধনী-গরিব সবাই খেতে পারবে।
হাড় ভাঙা: আকিকার পশুর হাড় না ভেঙে জোড়া জোড়া করে কাটা মুস্তাহাব। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়, হাড় ভাঙলেও কোনো সমস্যা নেই।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
আকিকা একটি ইবাদত, তাই এটি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা উচিত।
সামর্থ্য না থাকলে আকিকা করা জরুরি নয়। ইসলামে কারো উপর তার সামর্থ্যের বাইরে কিছু চাপানো হয় না।
এই নিয়মগুলো মেনে মেয়ের আকিকা সম্পন্ন করা যেতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন