অবিবাহিত মেয়েদের দুধে ব্যাথা হয় কেন

 অবিবাহিত মেয়েদের দুধে ব্যাথা হয় কেন




অবিবাহিত মেয়েদের দুধে ব্যথা হওয়ার কারণ

অবিবাহিত মেয়েদের দুধে ব্যথা হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কিছু কারণ নিচে দেওয়া হলো:

  • মাসিকের আগে হরমোনের পরিবর্তন: এটি একটি খুবই সাধারণ কারণ। মাসিকের আগে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রার তারতম্য ঘটে। এই হরমোনগুলো স্তন টিস্যুতে পরিবর্তন আনে, যার ফলে স্তনে ফোলাভাব, কোমলতা এবং ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই অবস্থাকে সাইক্লিক্যাল ব্রেস্ট পেইন বলা হয়, কারণ এটি মাসিক চক্রের সাথে সম্পর্কিত।

  • ফাইব্রোসিস্টিক ব্রেস্ট চেঞ্জেস (Fibrocystic Breast Changes): অনেক নারীর স্তনে ফাইব্রোসিস্টিক পরিবর্তন দেখা যায়, যা ক্যান্সার নয় এমন সিস্ট (তরল-ভরা থলি) এবং তন্তুময় টিস্যু তৈরির কারণ। এই সিস্টগুলো মাসিকের আগে বড় হতে পারে এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এটিও হরমোনের পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।

  • খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা: কিছু গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ (চা, কফি, চকলেট), উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এবং লবণ বেশি খেলে স্তনে ব্যথা বাড়তে পারে। এছাড়াও, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম বা বি৬ এর অভাবও কখনো কখনো স্তন ব্যথার কারণ হতে পারে।

  • আঁটসাঁট ব্রা পরা: ভুল মাপের বা অতিরিক্ত আঁটসাঁট ব্রা পরলে স্তনের উপর চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে যদি ব্রা সঠিক সাপোর্ট না দেয়।

  • ব্যায়াম বা আঘাত: strenuous ব্যায়াম বা স্তনে সরাসরি আঘাত লাগলেও ব্যথা হতে পারে।

  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, যেমন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস বা কিছু হরমোন থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে স্তনে ব্যথা হতে পারে।

  • স্ট্রেস: মানসিক চাপ বা স্ট্রেস শরীরের হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে, যা স্তন ব্যথার কারণ হতে পারে।


কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

যদি স্তন ব্যথা তীব্র হয়, দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, শুধুমাত্র একটি স্তনে হয়, ব্যথার সাথে স্তনে চাকা বা পিণ্ড অনুভব করেন, ত্বক লাল হয়ে যায় বা উষ্ণ অনুভূত হয়, অথবা স্তন থেকে অস্বাভাবিক কিছু নিঃসৃত হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্তন ব্যথা গুরুতর কোনো সমস্যার লক্ষণ নয়, তবুও একজন চিকিৎসকের দ্বারা পরীক্ষা করানো সবসময়ই ভালো।

অবিবাহিত মেয়েদের স্তনে ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি গুরুতর কিছু নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিচে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:


১. হরমোনের পরিবর্তন (Cyclic Breast Pain)

অবিবাহিত মেয়েদের স্তনে ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো মাসিক চক্রের সাথে সম্পর্কিত হরমোনের পরিবর্তন। একে "সাইক্লিক ব্রেস্ট পেইন" বা চক্রাকার স্তন ব্যথা বলা হয়।

  • কারণ: মাসিকের আগে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রার ওঠানামার কারণে স্তনের টিস্যু ফুলে যায় এবং সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।

  • লক্ষণ: সাধারণত মাসিকের ২-৩ দিন থেকে এক সপ্তাহ আগে ব্যথা শুরু হয় এবং মাসিক শুরু হওয়ার পর তা কমে যায়। ব্যথা সাধারণত উভয় স্তনেই হয়, বিশেষ করে স্তনের উপরের বাইরের অংশে এবং বগলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্যথা নিস্তেজ, ভারী বা টানটান ধরনের হতে পারে।

  • বয়স: সাধারণত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।


২. ফাইব্রোসিস্টিক ব্রেস্ট চেঞ্জেস

অনেক মহিলার স্তনে ফাইব্রোসিস্টিক পরিবর্তন থাকে, যার ফলে স্তনে সিস্ট (তরল ভর্তি থলি) বা ছোট ছোট পিণ্ড তৈরি হয়। এই সিস্টগুলো সাধারণত নিরীহ (ক্যান্সার নয়) এবং হরমোনের পরিবর্তনের সাথে সাথে বড় বা ছোট হতে পারে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।


৩. ভুল মাপের ব্রা পরা

যদি ব্রা সঠিক মাপের না হয় বা পর্যাপ্ত সাপোর্ট না দেয়, তাহলে স্তনের টিস্যুর উপর চাপ পড়তে পারে এবং ব্যথা হতে পারে। টাইট ব্রা বা খেলাধুলার সময় সঠিক ব্রা না পরলেও ব্যথা হতে পারে।


৪. আঘাত বা ট্রমা

স্তনে কোনো আঘাত লাগলে, যেমন - পড়ে গেলে বা কোনো কিছু দিয়ে লেগে গেলে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে।


৫. সংক্রমণ (Mastitis)

যদিও মাস্টাইটিস সাধারণত স্তন্যদানকারী মায়েদের বেশি হয়, তবে অবিবাহিত মেয়েদেরও স্তনে সংক্রমণ হতে পারে। এর ফলে স্তনে ব্যথা, ফোলাভাব, লালচে ভাব এবং জ্বর হতে পারে।


৬. অন্যান্য কারণ

  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, যেমন - জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বা কিছু হরমোন থেরাপি স্তনে ব্যথার কারণ হতে পারে।

  • বুকের পেশী বা হাড়ের সমস্যা: বুকের পেশীতে টান বা পাঁজরের তরুণাস্থির প্রদাহ (Costochondritis) স্তন ব্যথার মতো অনুভূত হতে পারে।

  • ক্যাফেইন ও খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ (চা, কফি, চকলেট), উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, বা অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্তন ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

  • মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ স্তন ব্যথাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।


কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

যদিও বেশিরভাগ স্তন ব্যথা গুরুতর নয়, তবে নিচের লক্ষণগুলো থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত:

  • ব্যথা যদি একটানা থাকে এবং মাসিক চক্রের সাথে সম্পর্কিত না হয়।

  • ব্যথা যদি তীব্র হয় এবং দৈনন্দিন কাজে বাধা সৃষ্টি করে।

  • স্তনে নতুন কোনো চাকা বা পিণ্ড অনুভব করলে।

  • স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন হলে।

  • স্তনের চামড়ায় লালচে ভাব, ফোলা, বা গর্ত দেখা দিলে (কমলালেবুর ছালের মতো)।

  • স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক রস বের হলে।

  • বগলে কোনো চাকা বা ফোলা অনুভব করলে।

স্তন ব্যথা অনুভব করলে অযথা দুশ্চিন্তা না করে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো। ডাক্তার আপনার সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করতে এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন