ই রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২৪ ২০২৫-ই রিটার্ন দাখিলের নিয়ম
বর্তমানে (২৩ এপ্রিল ২০২৫) বাংলাদেশে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষের ই-রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সাধারণত, আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩০শে নভেম্বর থাকে। তবে, করদাতাদের সুবিধার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সময়সীমা বাড়িয়ে ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত করেছিল।
এখন, যদি আপনি ২০২৪-২০২৫ করবর্ষের জন্য ই-রিটার্ন দাখিল করতে চান, তবে আপনাকে বিলম্বের কারণ উল্লেখ করে এনবিআর-এর কাছে আবেদন করতে হতে পারে। তবে, সাধারণত এই সময়ের পরে রিটার্ন দাখিল করলে জরিমানা হতে পারে।
ভবিষ্যতে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য ই-রিটার্ন দাখিলের নিয়মাবলী এবং সময়সীমা জানতে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ) নিয়মিত অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তবে, সাধারণভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের নিয়মাবলী নিচে দেওয়া হলো:
ই-রিটার্ন দাখিলের নিয়ম (সাধারণ পদ্ধতি):
১. নিবন্ধন:
* প্রথমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ই-পেমেন্ট ওয়েবসাইটে (https://etaxnbr.gov.bd/) যান।
* যদি আপনার আগে থেকে নিবন্ধন করা না থাকে, তাহলে টিআইএন (Taxpayer Identification Number) এবং আপনার বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করুন।
* 'আমি এখনও রেজিস্টার্ড নই' অপশনে ক্লিক করে আপনার টিআইএন এবং মোবাইল নম্বর দিন।
* আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (One-Time Password) পাঠানো হবে। ওটিপি প্রবেশ করে আপনার পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং রেজিস্টার করুন।
২. লগইন:
* নিবন্ধনের পর আপনার টিআইএন এবং সেট করা পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করুন।
৩. প্রোফাইল আপডেট:
* লগইন করার পর আপনার প্রোফাইল তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি আপডেট করুন। আপনার টিআইএন-এর সাথে সিঙ্ক করার অপশন থাকলে সেটি ব্যবহার করে তথ্য হালনাগাদ করতে পারেন।
৪. রিটার্ন ফরম নির্বাচন:
* আপনার আয়ের উৎস এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক রিটার্ন ফরমটি নির্বাচন করুন। সাধারণত ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য আইটি-১১গ (IT-11GA2023) ফরম প্রযোজ্য।
৫. তথ্য প্রদান:
* ফরমের বিভিন্ন অংশে আপনার আয়, বিনিয়োগ, ব্যয়, সম্পদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। এই ধাপে আপনাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে হবে না, শুধু তথ্যাবলী প্রদান করতে হবে।
৬. কর গণনা:
* সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কর গণনা করবে। আপনি চাইলে নিজেও আপনার কর হিসাব করে দেখতে পারেন।
৭. কর পরিশোধ (যদি প্রযোজ্য হয়):
* যদি আপনার প্রদেয় কর থাকে, তাহলে অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে (যেমন - অনলাইন ব্যাংক ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাংকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) পরিশোধ করতে পারেন।
৮. রিটার্ন দাখিল:
* সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কর পরিশোধ করার পর রিটার্ন দাখিল করার অপশনে ক্লিক করুন।
৯. প্রাপ্তি স্বীকারপত্র:
* সফলভাবে রিটার্ন দাখিল করার পর একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র (Acknowledgement Slip) তৈরি হবে। এটি ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- ই-রিটার্ন দাখিলের জন্য আপনার একটি টিআইএন এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর থাকতে হবে।
- তথ্য প্রদানের সময় সঠিকতা নিশ্চিত করুন।
- প্রয়োজনে এনবিআর-এর হেল্পলাইন (০৯৬৪৩৭১৭১৭১) অথবা তাদের ওয়েবসাইটে উপলব্ধ সহায়িকা ব্যবহার করতে পারেন।
আগামী ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য নতুন নিয়মাবলী বা পদ্ধতির পরিবর্তন হলে তা এনবিআর তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেবে।
ই-রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর:
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়মাবলী নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. নিবন্ধন (Registration):
- প্রথমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) ওয়েবসাইটে (
) যান।https://etaxnbr.gov.bd/ - "আমি এখনও রেজিস্টার্ড নই" ("I am not registered yet") অপশনে ক্লিক করুন।
- আপনার ১২ ডিজিটের টিআইএন (Taxpayer Identification Number) এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর প্রবেশ করুন।
- "যাচাই করুন" ("Verify") বাটনে ক্লিক করলে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ৬ ডিজিটের ওটিপি (OTP) পাঠানো হবে।
- ওটিপি কোডটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার পছন্দসই পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং "রেজিস্টার" বাটনে ক্লিক করে নিবন্ধন সম্পন্ন করুন।
২. লগইন (Log in):
- নিবন্ধনের পর, ওয়েবসাইটে আপনার টিআইএন, সেট করা পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা কোড দিয়ে লগইন করুন।
৩. রিটার্ন ফরম নির্বাচন (Return Form Selection):
- ড্যাশবোর্ডে "সাবমিশন" মেনুতে দুটি অপশন দেখতে পাবেন: "সিঙ্গেল পেজ" এবং "রেগুলার"। আপনার আয়ের উৎস এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে উপযুক্ত ফরমটি নির্বাচন করুন।
- যাদের মোট পরিসম্পদ ৫০ লাখ টাকার কম এবং আয় ৫ লাখ টাকার নিচে, তারা সাধারণত "সিঙ্গেল পেজ" ফরম ব্যবহার করতে পারেন।
৪. তথ্য প্রদান (Information Entry):
- নির্বাচিত ফরমের বিভিন্ন ঘরগুলোতে আপনার আয়, বিনিয়োগ, কর রেয়াত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণ করুন।
- অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্র আপলোড করার প্রয়োজন নেই, তবে আপনাকে সেই সকল কাগজপত্রের তথ্য প্রদান করতে হবে। তথ্যের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করতে সহায়ক কাগজপত্র আপনার কাছে রাখুন।
৫. কর গণনা ও পরিশোধ (Tax Calculation and Payment):
- সঠিকভাবে তথ্য পূরণ করার পর, সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার মোট আয়, কর রেয়াত এবং প্রদেয় করের হিসাব করবে।
- যদি আপনার কর পরিশোধের প্রয়োজন হয়, তবে অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধের অপশন থাকবে।
৬. রিটার্ন দাখিল (Return Submission):
- সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কর পরিশোধ করার পর, রিটার্ন দাখিলের অপশনে ক্লিক করে আপনার রিটার্ন জমা দিন।
৭. প্রাপ্তি স্বীকার ও সনদ (Acknowledgement and Certificate):
- সফলভাবে রিটার্ন দাখিল করার পর, আপনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র এবং আয়কর সনদ ডাউনলোড করতে পারবেন।
ই-রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস:
- ১২ ডিজিটের টিআইএন নম্বর।
- বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর (প্রয়োজনে)।
- আয়ের উৎস সংক্রান্ত তথ্য (বেতন, ব্যবসা, বিনিয়োগ ইত্যাদি)।
- বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রমাণপত্র (যদি কর রেয়াত দাবি করেন)।
- ব্যাংক হিসাবের বিবরণী।
- অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আর্থিক তথ্য ও নথি।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- ২০২৪-২০২৫ কর বছরে যাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক, তাদের অবশ্যই এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
- নিবন্ধন এবং রিটার্ন দাখিলের সময় সঠিক তথ্য প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি।
- কোনো সমস্যা হলে এনবিআরের কল সেন্টারে (০৯৬৪৩৭১৭১৭১) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেন।
এই নিয়মাবলী অনুসরণ করে আপনি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন।
إرسال تعليق